ভারতের রাষ্ট্রীয় বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (HAL) রাশিয়ার একটি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে যাত্রীবাহী বিমান তৈরির চুক্তি করেছে। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এই প্রাথমিক চুক্তিটি হয়েছে রাশিয়ার ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট কর্পোরেশনের (UAC) সঙ্গে, যা বর্তমানে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
এই সহযোগিতার ফলে প্রথমবারের মতো ভারতে দেশীয়ভাবে যাত্রীবাহী বিমান উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তবে এতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর চাপ বাড়তে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এখনো রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি ভারতীয় তেল শোধনাগারগুলো রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানোর পরিকল্পনা করছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি, যারা সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে।
UAC যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে এবং ওয়াশিংটন এটিকে রাশিয়ার সামরিক–শিল্প খাতের অন্যতম মূল প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করে।
মস্কোয় স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, HAL রাশিয়ার SJ-100 নামের দুটি ইঞ্জিনবিশিষ্ট সরু–বডির বিমান তৈরি করবে, যা সর্বোচ্চ ১০০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম। HAL এরই মধ্যে UAC-এর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অংশীদার হিসেবে কাজ করছে এবং ভারতের বিমানবাহিনীর জন্য সুখোই–৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানও উৎপাদন করে।
HAL এক বিবৃতিতে বলেছে, “HAL ও UAC-এর এই সহযোগিতা পারস্পরিক বিশ্বাসের ফল। এটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের আওতায় বেসামরিক বিমান শিল্পে একটি বড় পদক্ষেপ।”
ভারতীয় বিমান চলাচল খাতে আগামী ১০ বছরে আঞ্চলিক সংযোগের জন্য ২০০টির বেশি এবং প্রতিবেশী আন্তর্জাতিক পর্যটন গন্তব্যের জন্য আরও ৩৫০টির মতো জেট বিমানের প্রয়োজন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য বলেছেন, এই চুক্তি ভারতের বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে উত্থানের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তার ভাষায়, “এই চুক্তির মাধ্যমে ভারত প্রবেশ করছে বৈশ্বিক বেসামরিক বিমানবাজারে, যা এতদিন ইউরোপের এয়ারবাস ও যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িংয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল।”
