ভারতের ঔষধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন সিডিএসসিও সব রাজ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে যেন ১ জানুয়ারি থেকে সব ওষুধ কারখানা আন্তর্জাতিক উৎপাদন মানদণ্ডে স্কেজ্যুল এম মেনে চলে। শুক্রবার জারি বিজ্ঞপ্তিতে সময় বাড়ানোর শিল্পখাতের দাবি নাকচ করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বরের পর থেকে বিষাক্ত কফ সিরাপের সঙ্গে নতুন করে শিশু মৃত্যুর ঘটনা যুক্ত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ আগের শিথিলতা প্রত্যাহার করেছে।
সরকার ২০২৩ সালের শেষভাগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত জিএমপি মানদণ্ডে প্ল্যান্ট আপগ্রেডের নির্দেশ দেয়। এতে ক্রস কনটামিনেশন প্রতিরোধ এবং ব্যাচ টেস্টিং সক্ষমতা নিশ্চিত করার দিকনির্দেশনা ছিল।
আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ায় ভারতীয় কফ সিরাপের সঙ্গে জড়িত ১৪০ জনের বেশি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বৈশ্বিক ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ শুরু হয় এবং দেশের “ওষুধের ভান্ডার” পরিচিতি প্রশ্নের মুখে পড়ে।
বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো ২০২৪ সালের জুনের সময়সীমা পূরণ করেছে। ছোট ও মাঝারি নির্মাতাদের ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মধ্য ভারতের ২৪ শিশুর মৃত্যু অভিযোগে নতুন করে কঠোরতা আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, সংশোধিত স্কেজ্যুল এম ১ জানুয়ারি থেকে সবার জন্য প্রযোজ্য হবে।
রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক পরিদর্শন শুরু করতে বলা হয়েছে। যে কোনো ইউনিটকে অননুপালন অবস্থায় পাওয়া গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান আগের ছুটির আওতায় পড়ে না তাদের দ্রুত পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল রাজীব সিং রঘুভংশীর স্বাক্ষরিত নোটিশের বিষয়ে তার কার্যালয় তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেনি। রয়টার্স ১৭ অক্টোবর এক্সক্লুসিভভাবে জানিয়েছিল যে আর কোনো সময় বৃদ্ধি দেওয়া হবে না।
শিল্প সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, বাধ্যতামূলক মানানুবর্তিতার খরচ ছোট কারখানাগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। এসএমই ফার্মা ইন্ডাস্ট্রিজ কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জগদীপ সিং বলেন, গুণগত মান ভালো হলেও যদি মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায় তবে সুফল কী। তাদের আশঙ্কা, অনেক ইউনিট বন্ধ হলে কর্মসংস্থান কমবে এবং ওষুধের দাম বাড়তে পারে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার যুক্তি, রোগী সুরক্ষা এবং বৈশ্বিক বাজারে আস্থা পুনর্গঠনের জন্য স্কেজ্যুল এম সম্পূর্ণভাবে কার্যকর করা জরুরি। নির্দেশনা অনুযায়ী, মানদণ্ড বাস্তবায়নে রাজ্য পর্যায়ের পরিদর্শন জোরদার হবে এবং অনিয়ম ধরা পড়লে লাইসেন্স ও উৎপাদন স্থগিতসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
