ভারতের মধ্যপ্রদেশে হোমমেড কার্বাইড গান ব্যবহার করার ফলে কমপক্ষে ১৪ শিশু স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত তিন দিনে রাজ্যজুড়ে ১২০-এর বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে চোখের গুরুতর আঘাত নিয়ে।
কার্বাইড গান হল হোমমেড ডিভাইস, যা প্লাস্টিক বা টিনের পাইপ দিয়ে তৈরি হয় এবং এতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানি ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিশেষজ্ঞরা এটিকে “রাসায়নিক বোমা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বেপরোয়া ব্যবহার ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের কারণে, শিশুদের মধ্যে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৭ বছর বয়সী নেহা বলেন, “আমরা একটি কার্বাইড গান বানিয়েছিলাম। এটি বিস্ফোরিত হলে আমার চোখে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।”
মধ্যপ্রদেশের হাসপাতালগুলো—বিশেষ করে ভোপাল, ইন্দোর, জাবালপুর ও গ্বালিয়র—চিকিৎসা সংকট মোকাবিলা করছে। হমিদিয়া হাসপাতাল শুধুমাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২৬ জন শিশু ভর্তি করেছে।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে যাদের বিরুদ্ধে কার্বাইড গান বিক্রি ও প্রচারের অভিযোগ আছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা আর.কে. মিশ্রা বলেন, “দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা বিক্রি বা প্রচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চোখের আঘাতের পাশাপাশি কার্বাইড গান থেকে নির্গত অ্যাসিটিলিন গ্যাস শ্বাসনালীর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রদাহ, হাইপক্সিয়া, মাথা ঘোরা ও দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিভ্রংশের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বিহারের রাজধানী পাটনাতেও কমপক্ষে ৫০ শিশু একই ধরনের আঘাত পেয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মোট আহত শিশুদের সংখ্যা প্রায় ১৫০–২০০ জন অনুমান করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার পর জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে এবং কার্বাইড গান বাজানোর চেষ্টা ও বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
