ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়ায় দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। রবিবার সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ১০০ জনের বেশি সংসদ সদস্য এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন।
গত মার্চে দিল্লির তার সরকারি বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার হয়, যা নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিচারপতি বর্মা তখন হোলির ছুটিতে ছিলেন।
এই ঘটনার পরপরই দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে একটি প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়। এরপর বিচারপতির বিচারিক দায়িত্ব স্থগিত করা হয় এবং তাকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হয়।
একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার গঠিত তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার অপসারণের সুপারিশ পাঠায়।
সংবিধান অনুযায়ী, কোনো বিচারপতিকে অপসারণের প্রস্তাব আনতে লোকসভায় অন্তত ১০০ জন ও রাজ্যসভায় ৫০ জন এমপির স্বাক্ষর প্রয়োজন। এ প্রস্তাব পাসের জন্য উভয় কক্ষেই মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং উপস্থিত সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোট লাগবে।
লোকসভার স্পিকারের কার্যালয় এখন স্বাক্ষর যাচাইয়ের কাজ করছে। যাচাইয়ের পর একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট বিচার প্যানেল গঠন করা হবে, যেখানে একজন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি, একজন হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতি এবং একজন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ থাকবেন।
সরকার মনসুন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহেই প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই অধিবেশনের মধ্যেই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে, নইলে প্রস্তাবটি কার্যকারিতা হারাবে।
বিচারপতি যশবন্ত বর্মা তার নির্দোষিতা দাবি করে ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন।
স্বাধীন ভারতে এর আগে ২০১১ সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমিত্র সেন রাজ্যসভায় অভিশংসনের মুখোমুখি হন। তবে লোকসভায় আলোচনার আগে তিনি পদত্যাগ করেন। ১৯৯৩ সালে বিচারপতি ভি রামাস্বামীর বিরুদ্ধেও অভিশংসন প্রস্তাব উঠেছিল, কিন্তু তা পাস হয়নি।
বর্তমানে বিচারপতি বর্মার অভিশংসন ঘিরে সংসদীয় রাজনীতিতে তীব্র তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে।