ঢাকার উত্তরা এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে নিহত ২৯ জনের পরিচয় প্রকাশ করেছে সরকার। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে একটি ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ২১ জনের মরদেহ তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ছয়টি মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং একটি মরদেহ এখনও অজ্ঞাত রয়ে গেছে।
এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত ৬৯ জন এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচজন শিক্ষক, ৪১ জন শিক্ষার্থী, একজন স্কুল স্টাফ, একজন ফায়ারফাইটার, একজন পুলিশ সদস্য, ১৪ জন সেনা সদস্য, একজন সহকারী, একজন ইলেকট্রিশিয়ান এবং চারজন সাধারণ ব্যক্তি।
বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত হাসপাতালভিত্তিক আহত ও নিহতের তালিকাও প্রকাশ করা হয়:
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট: ৪৪ জন আহত, ১১ জন মৃত
কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল: ১ জন আহত, মৃত নেই
সমন্বিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ): ১৫ জন মৃত, ২১ জন আহত
লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টার, উত্তরা: ১ জন মৃত, ১৩ জন আহত
উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল: ১ জন আহত, মৃত নেই
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: ৩ জন আহত, ১ জন মৃত
শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ: ১ জন আহত, মৃত নেই
ইউনাইটেড হাসপাতাল: ২ জন আহত, ১ জন মৃত
হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব ও হাসপাতাল: ১ জন আহত
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন নয় বছর বয়সী শিশু নাফিসের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯-এ পৌঁছেছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি FT-7 BGI যুদ্ধবিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় এবং অধিকাংশই শিশু হতাহত হয়।
ঘটনায় ১৫০-এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) ৩১ জন নিহত ও ১৬৫ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল, যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের সঙ্গে ভিন্নতা তৈরি করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
বর্তমানে ঢাকা সিএমএইচে ছয়টি অজ্ঞাত মরদেহ রাখা আছে। এগুলোর পরিচয় শনাক্তে স্বজনদের সহযোগিতা চেয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।