রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) তদন্ত শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস। সংস্থাটির দাবি, মিয়ানমারের ক্ষমতাধর জাতিগত প্রতিরোধ বাহিনী আরাকান আর্মি (এএ) রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও শিরচ্ছেদের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত।
বুধবার প্রকাশিত এক নতুন তদন্ত প্রতিবেদনে ফর্টিফাই রাইটস জানিয়েছে, আরাকান আর্মি বর্তমানে রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তারা স্বল্পমেয়াদি আটক কেন্দ্রে ও গ্রামাঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন ঘটাচ্ছে।
ফর্টিফাই রাইটসের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ইজাজ মিন খান্ত বলেন, “আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভাবে অপহরণ, নিষ্ঠুর নির্যাতন ও হত্যার জন্য দায়ী। অনেকের মরদেহ শিরচ্ছেদ অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা যুদ্ধ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এখতিয়ার রয়েছে এবং তাদের উচিত রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত এইসব গুরুতর অপরাধের তদন্ত ও অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা।”
২০২৪ ও ২০২৫ সালে আরাকান আর্মির সহিংসতার শিকার ৩৯ জন রোহিঙ্গা, যাদের মধ্যে আটজন নারী, তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ফর্টিফাই রাইটস আরও জানিয়েছে, তারা ছবির মাধ্যমে ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে এসব অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
ইজাজ মিন খান্ত বলেন, “আরাকান আর্মির উচিত অবিলম্বে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। তারা যদি একটি বৈধ বিপ্লবী সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে চায়, তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করতে হবে এবং বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।”
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যকার সংঘাত দীর্ঘদিন ধরে চলছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সেনা বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের ফলে রোহিঙ্গারা নতুন করে বিপদের মুখে পড়ছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করছে।