অ্যাশেজ সিরিজ শুরুর আগে ইংল্যান্ড দলের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক ইয়ান বোথাম। তাঁর মতে, অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে আরও সময় প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের।
ইংল্যান্ডের পূর্ণাঙ্গ দলটি মাত্র গত রবিবার পার্থে পৌঁছেছে। তারা কেবল একটি অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে, এরপরই ২১ নভেম্বর শুরু হবে অ্যাশেজ সিরিজের উদ্বোধনী টেস্ট। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রায় সব খেলোয়াড় ইতোমধ্যেই দেশীয় শেফিল্ড শিল্ডে লাল বলের অনুশীলনে ব্যস্ত।
বোথাম বলেন, “এটা আমার প্রস্তুতির ধরণ নয়। ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় এসে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। এখানে আলোর পার্থক্য আছে, বল দ্রুত আসে, আর ‘ফ্রিম্যান্টল ডক্টর’ বাতাসের প্রভাবও থাকে। এই সবকিছুই প্রভাব ফেলে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “মনে রাখতে হবে, এখানে ২৪ মিলিয়ন মানুষ আছে, ১১ নয়। তাই চাপে থাকার মানসিক প্রস্তুতিও দরকার।”
২০২১-২২ সালের শেষ অ্যাশেজ সিরিজে জো রুটের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড দুইটি অভ্যন্তরীণ ম্যাচ খেললেও ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যায়। তবে বোথাম মনে করেন, এবার বেন স্টোকসের নেতৃত্বে ফলাফল ভিন্ন হতে পারে—যদি চোট সমস্যা এড়ানো যায়।
“এটা একটা বড় ‘যদি’। ইংল্যান্ডের পেসাররা যদি পুরো সিরিজে ফিট থাকে, আর অধিনায়কও সম্পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, তাহলে ইংল্যান্ডের ভালো সুযোগ আছে,” বলেন ৬৯ বছর বয়সী বোথাম।
তিনি আরও বলেন, ইংল্যান্ড চাইলে চারজন পেসার নিয়ে আক্রমণাত্মক কৌশল নিতে পারে। “ওয়েস্ট ইন্ডিজও গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একই কৌশলে সফল হয়েছিল। খেলোয়াড়দের শরীরে বল লাগলে তারা অস্বস্তিতে পড়ে—এটা কার্যকর উপায়।”
বোথাম এসব মন্তব্য করেন মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে, যেখানে ২০২৭ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ১৫০তম বার্ষিকী টেস্ট ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হয়। ম্যাচটি ১১-১৫ মার্চ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৮৭৭ সালের প্রথম টেস্টের স্মরণে আয়োজন করা হচ্ছে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, এই ঐতিহাসিক ম্যাচের টিকিটের ব্যালট শুরু হবে ২৩ ডিসেম্বর।
১৯৭৭ সালে অনুষ্ঠিত শতবর্ষী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে ৪৫ রানে হারিয়েছিল। সেই ম্যাচে ডেনিস লিলি নিয়েছিলেন ১১ উইকেট, আর ইংল্যান্ডের ডেরেক র্যান্ডাল করেছিলেন ১৭৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
সেই ম্যাচের অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেল স্মৃতিচারণ করে বলেন, “আমার ভাই ইয়ানের বিপক্ষে আমরা বাড়ির উঠোনেই ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া খেলতাম। ১৫০ বছরের ইতিহাসকে হারানো কঠিন।”
বোথামের সঙ্গে একমত হয়ে চ্যাপেল হেসে বলেন, “দুঃখের বিষয়, আমরা সেই ইতিহাসের অর্ধেক সময়ই বেঁচে আছি।”
