জাতীয় উন্নয়নের জন্য সুনির্ভুল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।
বিশ্ব জলপথ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে শনিবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব অপরিসীম। শুধু বাংলাদেশ নয়, আশপাশের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও অনেকাংশে এই উপকূলীয় জলসীমার ওপর নির্ভরশীল।”
তিনি আরও বলেন, “সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য হালনাগাদ ও নির্ভুল হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের কোনো বিকল্প নেই।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশকে একটি উৎপাদনশীল ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে জলপথের মানচিত্রায়ন ও তথ্য সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ দেশের জলসীমায় জরিপ চালানো, মানচিত্র তৈরি, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসারে তথ্য আদানপ্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
জাতিসংঘের ‘ল’ অব দ্য সি (UNCLOS) অনুযায়ী সমুদ্রবক্ষ চিহ্নিতকরণ ও ব্লু ইকোনমি গড়ে তুলতে হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ইউনুস।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামরিক ও নৌ নিরাপত্তা ছাড়াও হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
সুস্থ ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়তে সাগরের তলদেশের নির্ভুল মানচিত্রের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও টেকসই সামুদ্রিক নীতিমালা তৈরির ওপর জোর দেন তিনি।
দেশের হাইড্রোগ্রাফি সংশ্লিষ্ট সকল পেশাদারকে আরও পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের সমুদ্রসীমা ঘিরে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যভাণ্ডার তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনুস সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে একত্রে বিশ্ব জলপথ দিবস পালন করছে, এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।”
তিনি দিবসটির আয়োজনে সম্পৃক্ত সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং অনুষ্ঠানের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।
এ বছর বিশ্ব জলপথ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সিবেড ম্যাপিং: এনাবলিং ওশান অ্যাকশন’।