শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) নতুন টার্মিনালে যাত্রীসেবাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা এস কে বাশির বলেছেন, যাত্রীসেবা মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশকে (ইউএনবি) তিনি জানান, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে প্রতিযোগিতা বাড়াতে বিমানের পাশাপাশি দ্বিতীয় একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর লক্ষ্য সেবা মান উন্নয়ন ও যাত্রী সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা।
উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য বিমানের প্রতিযোগিতা কমানো নয়। তবে একই সঙ্গে যাত্রীসেবার মানও যেন নিচে নেমে না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”
এদিকে, নতুন টার্মিনালের কার্যক্রম নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) এবং একটি জাপানি কনসোর্টিয়ামের মধ্যে তিন দিনব্যাপী আলোচনা চলছে। বৃহস্পতিবার শেষ পর্বের আলোচনায় সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে উপদেষ্টা বাশিরের। এতে আন্তর্জাতিক অর্থ করপোরেশন (আইএফসি) সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ অংশ নিচ্ছে।
সিএএবি সূত্র জানায়, শুরুতে বিমানের জন্য একচেটিয়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দুই বছরের অনুমতি দেওয়া হলেও কনসোর্টিয়াম এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা বিস্তৃত কার্যক্রমের অধিকার ও আয় ভাগাভাগি চায়। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের আওতায় বিমানের সঙ্গে টার্মিনালের বেসরকারি অপারেটরের মধ্যে সেবা মান চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
বর্তমানে দেশে সব বিমানবন্দরে প্রায় ৪০টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করছে বিমান। বছরে প্রায় এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশ কোটি টাকা আয় করে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন যন্ত্রপাতি ও জনবল নিয়োগের দাবি করলেও যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে দেরি, অদক্ষতা ও মাঝে মাঝে মালামাল হারানোর বিষয়ে।
বিমান জানিয়েছে, ২০২৩ সালে তারা ৫৭ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ হাজার ৬০০ নতুন গ্রাউন্ড সাপোর্ট যন্ত্রপাতি যুক্ত করেছে। আরও ৭০টি যন্ত্র শিগগিরই আসবে। বিমানের দাবি, আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে দায়িত্ব দিলে দেশের আয় কমে যাবে।
প্রসঙ্গত, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তৃতীয় টার্মিনালে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রী এবং ১২ লাখ টন কার্গো পরিবহনের সক্ষমতা থাকবে। ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে থাকছে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি প্রস্থান ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি আগমন ইমিগ্রেশন ডেস্ক এবং তিনটি ভিআইপি ডেস্ক।