ঢাকা, ২৬ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : জনপ্রিয় হরর সিরিজ Final Destination এমন একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি যেখানে অতিপ্রাকৃত মৃত্যু প্রায় একটি সত্তা হয়ে হাজির হয়। প্রতিটি কিস্তিতে দেখা যায় একদল মানুষ ভয়ানক এক দুর্ঘটনার পূর্বাভাস পায় এবং প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু এরপর থেকে একে একে তারা মৃত্যুর শিকার হতে থাকে, যেন অদৃশ্য কোনো তালিকা অনুসরণ করে তাদের জীবন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
চরিত্ররা এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে প্রথমে নিজেদের আশপাশকে নিরাপদ করে তোলে। কেউ একাকী কেবিনে আশ্রয় নেয়, কেউ নিজেকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। সাময়িকভাবে এগুলো কাজে আসে, তবে একটিমাত্র ভুল মুহূর্তেই মৃত্যু ঘনিয়ে আসে।
সিরিজে আরও একটি পন্থা দেখানো হয়, যার মাধ্যমে মৃত্যুর নকশা বদলানো সম্ভব হতে পারে বলে মনে হয়। সেটি হলো নতুন জীবন সৃষ্টি করা। কেউ সন্তান জন্ম দেয়, কেউ আবার ডুবে গিয়ে পুনরায় জীবিত হয়। যদিও কিছুক্ষণের জন্য এটি কার্যকর বলে মনে হয়, পরে দেখা যায় মৃত্যু সেসব জীবনকেও ফিরিয়ে নিতে চায়, যারা হয়তো কখনো জন্মই নেওয়ার কথা ছিল না।
মৃত্যুর উপস্থিতি প্রায়শই আগাম সংকেত দেয়। প্রতিচ্ছবি, ছায়া বা ছবির মধ্য দিয়ে সংকেত দেয় কোন চরিত্র কীভাবে মারা যেতে পারে। কেউ কেউ এই সংকেত বুঝে সাবধান হতে পারে, তবে অনেকে মনে করে মৃত্যু নিজেই এগুলো দেখিয়ে প্রতারণা করছে।
সবচেয়ে চরম যে পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে তা হলো কারও জীবন কেড়ে নিয়ে নিজের আয়ু বাড়িয়ে নেওয়া। ফাইনাল ডেস্টিনেশন ৫-এ এমন একটি চরিত্র দেখানো হয় যে দুর্ঘটনার মাধ্যমে অন্যের মৃত্যু ঘটিয়ে নিজের জীবন দীর্ঘায়িত করে। যদিও এটি কাজ করে, এই পদ্ধতিটি নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ কেউ নিশ্চিত হতে পারে না যে অন্য ব্যক্তি কতদিন বাঁচত, ফলে নিজের আয়ুও সীমিত হতে পারে।
সবশেষে এই সিরিজটি এক কঠিন সত্যের মুখোমুখি করে। মৃত্যুকে হয়তো কিছু সময়ের জন্য ঠেকানো যায়, তবে তাকে চিরতরে হারানো যায় না। কেউ যদি তাকে ফাঁকি দেয়, তবে মৃত্যুও অপেক্ষা করতে জানে এবং শেষ পর্যন্ত সে তার কাজ শেষ করেই ছাড়ে।
Final Destination কেবল ভয় দেখানোর গল্প নয়। এটি জীবনের অনিশ্চয়তা এবং মৃত্যুর অপরিহার্যতা নিয়ে দর্শকদের ভাবায়। শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকা মানে শুধু সময় বাড়ানো নয়, বরং কীভাবে সেই সময়টুকু ব্যবহার করা যায়, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়।