ঢাকার প্রতিটি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের ছাদে কার্যকর সৌর প্যানেল স্থাপন ও তা চালু রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার (রিট নম্বর ৭২৬৪/২০২৫) প্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আদেশে বলা হয়, যেসব ভবনে সৌর প্যানেল আগে থেকেই স্থাপন করা আছে, সেগুলোকে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি নতুন করে প্রতিটি ভবনের ছাদে পর্যাপ্ত ও কার্যকর সৌর প্যানেল স্থাপনের জন্য সময়সীমা নির্ধারিত কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করতে হবে।
রাজউক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) কে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যমান সৌর প্যানেলগুলো চালু করার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যৌথভাবে একটি বাস্তবায়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য।
আদেশে আরও বলা হয়, নির্দেশনার অগ্রগতি নিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
বেলার পক্ষে অ্যাডভোকেট এস হাসানুল বান্না এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন শুনানিতে অংশ নেন।
বেলা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে ভবনের অব্যবহৃত ছাদগুলোতে সৌর প্যানেল স্থাপন করে সেগুলোকে শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে বহু ভবনে সৌর প্যানেল থাকলেও অধিকাংশই অনিয়ম ও তদারকির অভাবে অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় গ্রিডের ওপর চাপ কমাতে ও কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে ছাদের ব্যবহারের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা সরকারি ভবনগুলোতে সৌর প্যানেল স্থাপন শুরুর নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী এখন বেসরকারি ভবনগুলোও এই নির্দেশনার আওতায় আসবে।
এই মামলায় বিবাদীদের মধ্যে রয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ, গৃহায়ন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, রাজউক, স্রেডা, ডিপিডিসি, ডেসকো এবং রিহ্যাব সভাপতি।