যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আবারও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, আইভি লিগের এই প্রাচীন প্রতিষ্ঠানকে ফেডারেল শিক্ষাঋণ তহবিলে প্রবেশাধিকার পেতে নতুন নিয়ম মেনে চলতে হবে।
শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, হার্ভার্ডকে এখন থেকে নিজেদের তহবিল ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। এরপরই তারা ফেডারেল তহবিল থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে “হাইটেনড ক্যাশ মনিটরিং”।
এছাড়া হার্ভার্ডকে ৩৬ মিলিয়ন ডলারের লেটার অব ক্রেডিট জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিভাগ। সাম্প্রতিক বন্ড ইস্যু এবং ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে অবস্থান নিয়েছে। প্রো-ফিলিস্তিনি আন্দোলন, জলবায়ু নীতি, ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী অধিকার এবং ডাইভারসিটি ও ইনক্লুশন কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে হার্ভার্ডসহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষা বিভাগের সিভিল রাইটস অফিস হার্ভার্ডের ভর্তি প্রক্রিয়ায় জাতিগত বিবেচনা চলছে কি না, তা তদন্ত করছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ২০২৩ সালে অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করে।
হার্ভার্ড এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে গত জুলাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ফেডারেল সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো তাদের বার্ষিক বাজেটে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে প্রশাসনের কয়েকটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছে।
অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, হার্ভার্ডকে কমপক্ষে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে “চরম বামপন্থী” মতাদর্শ প্রভাব বিস্তার করেছে এবং ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ২২০ মিলিয়ন ডলার এবং ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় ৫০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায়। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ)-এর সঙ্গেও সরকার এক বিলিয়ন ডলারের সমঝোতা প্রস্তাব দেয়, যা ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর প্রত্যাখ্যান করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে চলমান এই দ্বন্দ্বে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান শুধু হার্ভার্ড নয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
