যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি অনুমতি বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে শিক্ষাজগতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম জানান, “হার্ভার্ড আইন অনুসরণে ব্যর্থ হয়েছে, তাই তাদের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফিকেশন বাতিল করা হলো।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সতর্কবার্তা।”
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, “১৪০টিরও বেশি দেশের শিক্ষার্থী ও গবেষক আমাদের ক্যাম্পাসে আসেন এবং তা বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের জন্য অমূল্য অবদান রাখে। এই প্রতিশোধমূলক সিদ্ধান্ত আমাদের শিক্ষা ও গবেষণার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।”
হার্ভার্ডের মতে, বর্তমানে তাদের শিক্ষার্থীদের ২৭ শতাংশই আন্তর্জাতিক। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৬৭০০-এর বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী সেখানে অধ্যয়ন করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ছাত্রী সারা ডেভিস বলেন, “আমরা মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে গ্র্যাজুয়েশন করছি, আর এখনই এই খবর এলো। সবাই দুশ্চিন্তায় আছি, এখনো নিশ্চিত না পরবর্তীতে কী হবে।”
হোয়াইট হাউস সম্প্রতি হার্ভার্ডকে ভর্তির প্রক্রিয়া, শিক্ষক নিয়োগ ও পাঠদানে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানায় এবং antisemitism ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর অব্যাহতি বাতিল ও সরকারি অনুদান বন্ধের হুমকি দেওয়া হয়।
হার্ভার্ড এর আগে জানিয়েছিল, তারা antisemitism মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিয়েছে, এবং প্রশাসনের দাবিকে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবারের চিঠিতে সেক্রেটারি নোম বলেন, হার্ভার্ডকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫ বছরের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের শাস্তিমূলক রেকর্ড, ভিডিও ফুটেজ ও ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া ‘বেআইনি বা সহিংস’ ঘটনার প্রমাণাদি জমা দিতে হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার এক ফেডারেল বিচারক ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করে বলেন, বিষয়টি এখনো আদালতের বিচারাধীন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু হার্ভার্ড নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও ভূমিকা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলছে।
