বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের তারকা মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী বলেছেন, ফুটবল একক খেলা নয়। সবাই মিলে খেললেই জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়।
মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “ফুটবল শেষ পর্যন্ত দলীয় খেলা। মেসি যদি বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলতেন, তবুও কৌশল আর দলীয় স্পিরিটের চ্যালেঞ্জ থাকত। সবাই একসাথে খেললেই দল সফল হবে।”
ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডার আসন্ন এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় ম্যাচে হংকং, চীনের বিপক্ষে দলের প্রস্তুতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “এটা আমার তৃতীয়বার দলের সঙ্গে খেলা। খেলোয়াড় ও কোচদের সঙ্গে সম্পর্ক এখন অনেক ভালো। সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা জিতব।”
হামজা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন, যেখানে তার একটি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট আছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের বিপক্ষে বাছাইপর্বের ম্যাচ, ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ এবং সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ।
দলের মনোভাব নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সবচেয়ে দরকার আত্মবিশ্বাস। প্রতিভা, পরিশ্রম করার মানসিকতা ও আগ্রাসন—সবই আছে। শুধু একবার জিততে হবে, তাহলেই দল জয়ী মানসিকতা পাবে।”
কোচ হাভিয়ের ক্যাবরার পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, “কোচই সব সিদ্ধান্ত নেন। আমি অভিজ্ঞতা দিয়ে তাঁকে সহায়তা করি। প্রতিটি ম্যাচে পরিকল্পনা আলাদা হয়। সবাই পরিশ্রম করছে, আমি বিশ্বাস করি পরিকল্পনাটা কাজ করবে।”
চোটের বিষয়টি নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন, “ফুটবলে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। কিছু খেলোয়াড় চোটে ভুগলেও দল খুবই শক্তিশালী। আমি সবাইকে বিশ্বাস করি। জয়ের জন্য আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে।”
তিনি জানান, বার্মিংহামের বিপক্ষে ক্লাব ম্যাচে গোড়ালিতে চোট পাওয়ায় নেপাল সফরে যেতে পারেননি। “সিজনের শুরুতে ঝুঁকি নিতে চাইনি,” বলেন হামজা।
সিঙ্গাপুর ম্যাচে দলের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়নি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা গোল খেয়েছি, আর শেষ দিকে পেনাল্টি পেলে ফল ভিন্ন হতে পারত। পরিকল্পনা সব সময় কাজ করে না, কিন্তু আমি কোচ ও খেলোয়াড়দের বিশ্বাস করি। হংকং নতুন প্রতিপক্ষ, নতুন চ্যালেঞ্জ। আমরা জিততে পারব, যদি নিজেদের পরিকল্পনা ঠিকভাবে মাঠে প্রয়োগ করি।”
কোচের কৌশল নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “সবাইয়ের মত আলাদা হতে পারে। আমরা আমাদের সেরাটা দিয়েছি, ফল আমাদের পক্ষে যায়নি। কোচ বুদ্ধিমান, তরুণ দলের সঙ্গে কাজ করছেন। শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ফল আনা সহজ নয়, কিন্তু আমরা বিশ্বাস রাখলে তা সম্ভব।”
নিজের ভূমিকা নিয়ে হামজা বলেন, “আমি মিডফিল্ডার। আমার কাজ আক্রমণ ও রক্ষণ দুটোই করা। আমি উভয় দিকেই ভালো করার চেষ্টা করব।”
বাংলাদেশি দর্শকদের ভালোবাসা নিয়েও তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। “আমি এখানে আসতে খুব ভালোবাসি। এবার দ্বিতীয়বার স্ত্রী ও সন্তানদের এনেছি। তারা সবাই এখানে উপভোগ করছে। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা অনন্য,” বলেন হামজা চৌধুরী।
