গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধে ইসরায়েলের দেওয়া ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিকভাবে জবাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি দলসমূহ যৌথভাবে এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া কাতারে অবস্থানরত মধ্যস্থতাকারীদের কাছে জমা দিয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির শর্তাবলীর কয়েকটি ধারায় সংশোধনী প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মানবিক সহায়তা প্রবেশ, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের এলাকাভিত্তিক মানচিত্র এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার নিশ্চয়তা নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা।
গত দুই সপ্তাহ ধরে দোহায় উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে এলেও এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
হামাসের ২০২৩ সালের হামলায় অপহৃত ২৫১ জন ইসরায়েলি নাগরিকের মধ্যে এখনও ৪৯ জন গাজায় অবস্থান করছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জনকে মৃত বলে ধারণা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
তবে আলোচনার গতি শ্লথ হওয়ার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। ইসরায়েলের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার বুধবার বলেন, “ইসরায়েল কাতারের প্রস্তাব এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের হালনাগাদ প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে, কিন্তু হামাস এখনও অস্বীকৃতি জানিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি আলোচক দল এখনও দোহায় অবস্থান করছে এবং আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, তারা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার নিশ্চয়তা, ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং অবরুদ্ধ গাজায় সাহায্যের প্রবাহ অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা চায়।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, দূত উইটকফ ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন, যেখানে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ও সাহায্যের করিডোর নিয়ে আলোচনা করবেন।
মানবিক সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছে ১০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা। তারা সতর্ক করে বলেছে, “গাজায় ব্যাপক অনাহার ছড়িয়ে পড়ছে।”
গাজা উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে এই প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও উভয় পক্ষের মূল দাবিতে অনমনীয়তা থাকায় সমঝোতা এখনও অনিশ্চিত। আলোচনার পরবর্তী ধাপে কেমন অগ্রগতি হয়, তা নির্ধারণ করবে অঞ্চলটির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি।