ডেপ্রবা ডেস্ক: Google-এর পরবর্তী প্রজন্মের ফোল্ডেবল স্মার্টফোন Pixel Fold 2 বাংলাদেশ ও ভারতের বাজারে প্রবেশের অপেক্ষায়। ভাঁজযোগ্য ফোনের প্রতি ব্যবহারকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ডিভাইস নিয়ে প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে।
বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১,২৫,০০০ টাকা এবং ভারতে প্রায় ১,০৫,০০০ রুপি। তথ্য এসেছে TechBengal, E-Zone ও India Today-এর মতো নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে।
এই ফোনের মাধ্যমে Google ফোল্ডেবল ক্যাটেগরিতে নিজের উপস্থিতি জোরালোভাবে জানান দিতে চাইছে।
প্রিমিয়াম পজিশনিং
বাংলাদেশে Fold 2 মূলত শহরের তরুণ প্রযুক্তিপ্রেমী এবং প্রিমিয়াম সেগমেন্টের ক্রেতাদের লক্ষ্য করে বাজারজাত হচ্ছে। যদিও দাম একটু বেশি, তবু নতুন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ থাকায় চাহিদা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
অফিশিয়াল চ্যানেল ছাড়া গ্রে মার্কেট থেকে কেনাকাটায় সাবধান থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ এতে ওয়ারেন্টি এবং আসল সফটওয়্যার না-ও থাকতে পারে।
ভারতেও একই রেঞ্জে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে ফোনটি Samsung ও Oppo-র মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামবে।
বৈশ্বিক দাম ও তুলনা
যুক্তরাষ্ট্রে Fold 2-এর প্রারম্ভিক দাম প্রায় $1799, চীনে CNY 12,999 এবং যুক্তরাজ্যে £1650।
দাম কিছুটা বেশি হলেও অনেকেই এটিকে “ভবিষ্যতের ফোন” হিসেবে দেখছেন। রিভিউ বলছে, ডিজাইন ও ফিচার মিলিয়ে দাম যথার্থ মনে করছেন ব্যবহারকারীরা।

প্রধান ফিচার ও স্পেসিফিকেশন
ডিসপ্লে ও বিল্ড কোয়ালিটি:
অভ্যন্তরীণ ৭.৬ ইঞ্চির AMOLED ডিসপ্লে 2208×1840 পিক্সেল রেজোলিউশনের। বাইরের ডিসপ্লে ৫.৮ ইঞ্চি, 2092×1080 রেজোলিউশন। পাতলা গ্লাস এবং মজবুত hinge ফোনটিকে দৈনন্দিন ব্যবহারের উপযোগী করে তুলেছে।
চিপ ও স্টোরেজ:
Google-এর নিজস্ব Tensor চিপসেট, সঙ্গে ১২GB RAM। স্টোরেজ অপশন: ২৫৬GB, ৫১২GB এবং ১TB।
ব্যাটারি ও চার্জিং:
৪৮০০mAh ব্যাটারি, ৩০W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট। আছে ওয়্যারলেস চার্জিংও।
অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার:
Android 14 চলবে এতে। ফোল্ডেবল স্ক্রিনের জন্য অপ্টিমাইজড মাল্টিটাস্কিং ফিচার থাকছে।
কানেক্টিভিটি ও সেন্সর:
Wi-Fi 6E, Bluetooth 5.2, ৫জি, ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, অ্যাক্সিলারোমিটার, জাইরোস্কোপসহ আধুনিক সেন্সরসমূহ।
ক্যামেরা ও মিডিয়া:
৪৮MP মূল ক্যামেরা ও ১২MP আল্ট্রাওয়াইড। স্টেরিও স্পিকার থাকায় ভিডিও ও গেমিংয়ের অভিজ্ঞতা হবে প্রাণবন্ত।
ডিউরাবিলিটি:
IPX8 রেটিং থাকায় জলে সামান্য ডুবে যাওয়া বা ছিটেফোটা প্রতিরোধে সক্ষম। Google Assistant-এর আপগ্রেডেড ভার্সন থাকছে fold-specific ফিচারসহ।
প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে তুলনা
Samsung Galaxy Z Fold 4 ও Oppo Find N-কে প্রধান প্রতিযোগী বলা যায়। Samsung-এর ডিসপ্লে বড় হলেও ডিজাইন কিছুটা ভারী। Oppo তুলনামূলক হালকা ও ছোট, তবে Google-এর মতো সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন নেই।
Pixel Fold 2 তাদের তুলনায় ভারসাম্যপূর্ণ ডিজাইন ও রিয়েল-ওয়ার্ল্ড ইউজের অভিজ্ঞতা দেয় বলে অনেকেই মনে করছেন।
আরও পড়ুন:
কেন কিনবেন?
ছাত্র, প্রফেশনাল, গেমার কিংবা কনটেন্ট ক্রিয়েটর—সব ধরনের ব্যবহারকারীদের জন্যই Fold 2 উপযোগী। বড় স্ক্রিন, শক্তিশালী হার্ডওয়্যার ও স্মার্ট সফটওয়্যার একত্রে এটিকে শক্তিশালী একটি ডিভাইস করে তুলেছে।
Google-এর ইকোসিস্টেমের সঙ্গে সহজ ইন্টিগ্রেশন ফোনটির আরেকটি বড় সুবিধা।
ব্যবহারকারীদের মতামত
প্রাথমিক ব্যবহারকারীরা ফোনটির ডিসপ্লে ও ডিজাইন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলছেন দাম কিছুটা বেশি, তবে পারফরম্যান্সের দিক থেকে এটি প্রত্যাশা পূরণ করেছে।
গড় রেটিং দাঁড়িয়েছে ৪.৫ এর কাছাকাছি।
Google Pixel Fold 2 শুধুই আরেকটি ফোন নয়। এটি ভবিষ্যতের প্রযুক্তিকে এখনকার বাস্তবতায় এনে দিচ্ছে। কাজ, বিনোদন বা সৃজনশীল কাজ—সবক্ষেত্রেই এটি একটি প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা দেবে বলে আশা করা যায়।
আপনি যদি একটি শক্তিশালী, ফোল্ডেবল এবং ইউজার-ফ্রেন্ডলি ফোন খুঁজে থাকেন, তাহলে Pixel Fold 2 হতে পারে আপনার পরবর্তী সঙ্গী।