Sunday, June 22, 2025
Homeআন্তর্জাতিকজার্মানির সিদ্ধান্তে নতুন মোড়, ইউক্রেনকে ‘টারাস’ মিসাইল দিতে প্রস্তুতি

জার্মানির সিদ্ধান্তে নতুন মোড়, ইউক্রেনকে ‘টারাস’ মিসাইল দিতে প্রস্তুতি

ঢাকা, ২৮ মে, ২০২৫ (ডেপ্রবা) : ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে নতুন মোড় নিয়েছে জার্মানির সিদ্ধান্ত। বার্লিন এখন ইউক্রেনকে যেকোনো রাশিয়ান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অনুমতি দিয়েছে এবং তারা ভবিষ্যতে কী অস্ত্র দিচ্ছে বা কত দিচ্ছে, সে তথ্য প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নীতিগত পরিবর্তন রাশিয়ার তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

রাশিয়ার তরফ থেকে বার্লিনকে এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যদিও জার্মানি সরাসরি এখনো ‘টারাস’ মিসাইল সরবরাহের কথা নিশ্চিত করেনি, তবে নীতিগত পরিবর্তনে সেই সম্ভাবনা এখন উজ্জ্বল।

টারাস মিসাইল একটি অত্যাধুনিক, স্টিলথ প্রযুক্তিনির্ভর ক্রুজ মিসাইল, যার পাল্লা ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি। এটি সহজেই ঘন বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে সক্ষম। ইউক্রেনের বর্তমান প্রতিরক্ষা পরিস্থিতিতে এটি হতে পারে একেবারে গেম-চেঞ্জার।

এর আগে ইউক্রেন ইতোমধ্যে ব্রিটিশ ‘স্টর্ম শ্যাডো’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘এটিএসিএএমএস’ মিসাইল ব্যবহার করছে, যাদের পাল্লা যথাক্রমে ২৫০ কিলোমিটার ও ৩০০ কিলোমিটার। এছাড়াও ইউক্রেন নিজস্ব তৈরি ‘নেপচুন’ মিসাইলকে ভূমি-লক্ষ্যে আঘাত হানার জন্য অভিযোজিত করেছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহে রাশিয়ার আকাশপথে ড্রোন ও মিসাইল হামলার প্রবল ঢেউয়ের মুখে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা টালমাটাল হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জার্মানির এমন সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের পক্ষে একটি নতুন কৌশলগত সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এখনো সরাসরি টারাস মিসাইল সরবরাহের কথা বলেননি। তবে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা ফ্রিডরিশ মারৎস সরকারকে এ নিয়ে আগেই তীব্র সমালোচনা করে আসছিলেন। তাঁর সাম্প্রতিক নীরবতা এবং অস্ত্র সরবরাহ নীতি পরিবর্তন অনেকেই একটি ‘সঙ্কেতমূলক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখছেন।

আরও পড়ুন:

এদিকে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়াকে ‘ভিক্টিম কার্ড’ আখ্যা দিয়ে পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং এই সহযোগিতা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বৈধ।

সাবেক ন্যাটো জেনারেল ও সামরিক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল বেন জানান, “ইউক্রেনকে সহায়তা নতুন কিছু নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় থেকেই জ্যাভলিন মিসাইল দেওয়া হয়েছে। রাশিয়া সবসময়ই এই ধরনের সহায়তাকে নিজেদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে তুলে ধরে।”

এই নতুন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যদি সত্যিই টারাস মিসাইল পায়, তবে তা যুদ্ধের চিত্র পাল্টে দিতে পারে। শুধু ইউক্রেন নয়, বরং রাশিয়ার আভ্যন্তরীণ এলাকাও হতে পারে সরাসরি হামলার টার্গেট। এর ফলে যুদ্ধ বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুধু কিয়েভ ও মস্কোর দ্বন্দ্ব নয়, বরং আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যের নতুন পর্বে প্রবেশ করছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

RELATED NEWS

Latest News