Sunday, June 22, 2025
Homeআন্তর্জাতিকজাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা এখন “পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান”, ২১ লাখ মানুষ ক্ষুধার...

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা এখন “পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান”, ২১ লাখ মানুষ ক্ষুধার মুখে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক; জেনেভা, ১লা জুন ২০২৫: জাতিসংঘ বলেছে, গাজা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত এলাকা। সংস্থাটির সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২১ লাখ মানুষের প্রত্যেকেই ক্ষুধার ঝুঁকিতে রয়েছে।

জেনেভা থেকে কথা বলার সময় জাতিসংঘের মুখপাত্র ইয়েন্স লার্কে বলেন, “গাজা একমাত্র স্থান যেখানে প্রতিটি মানুষ ক্ষুধার মুখে পড়েছে।”

তিনি বলেন, যেটুকু ত্রাণ প্রবাহিত হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। “এটা কোনো বন্যা নয়। গাজায় ঢোকার ট্রাকের সংখ্যা খুবই সীমিত। এই খাদ্যপ্রবাহ এক রকম ফোঁটায় ফোঁটায় পড়ছে। আর এটা এমন এক জায়গায় হচ্ছে, যেটি চরম ক্ষুধার দ্বারপ্রান্তে।”

জাতিসংঘের মতে, তাদের সহায়তা প্রস্তুত থাকলেও বাস্তবায়নের পথে অনেক বাধা রয়েছে। “এই পুরো সহায়তা কার্যক্রম যেন এক রকমের শৃঙ্খলে আটকে আছে।”

গত সপ্তাহে ইসরায়েল তিন মাসের অবরোধের পর সীমিতসংখ্যক ত্রাণ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে দেয়। সেই অবরোধের সময় খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি এবং আশ্রয়কেন্দ্রের সকল রকম সহায়তা বন্ধ ছিল।

তবে ত্রাণ পুনরায় প্রবেশ শুরু হওয়ার পরপরই, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (GHF) আটটি বিতরণকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। এই সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত। প্রচণ্ড ভিড়ের ফলে স্বেচ্ছাসেবকেরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তত ৪৭ জন গুলিবিদ্ধ হন।

জাতিসংঘ বলেছে, তারা GHF-এর সঙ্গে কোনো ধরনের কাজ করবে না। কারণ, তারা নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে চায়।

এদিকে, হামাসের সঙ্গে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল ফের বিমান হামলা শুরু করেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলার উদ্দেশ্য হলো হামাসকে ৫৮ জন আটক ব্যক্তিকে মুক্ত করতে চাপ সৃষ্টি করা। ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে অন্তত ২০ জন এখনো জীবিত।

আরও পড়ুন:

ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক স্বেন কুপমানস বলেন, ইসরায়েলের সামরিক হামলা “প্রয়োজনের অনেক বেশি”। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ বলেন, তিনি আর বুঝতে পারছেন না ইসরায়েলের লক্ষ্য কী।

এর আগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে এবং ত্রাণ প্রবাহ অবাধ করতে বলেছিলেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এসব দেশ আসলে হামাসের পক্ষ নিচ্ছে।

এদিকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সীমান্তগুলো এখনো বেশিরভাগ সময় বন্ধ। ত্রাণ ট্রাকগুলো আটকে আছে। খাবার, পানি, জ্বালানি এবং ওষুধের সংকট প্রতিদিনই বাড়ছে।

জাতিসংঘ বলেছে, এটা কেবল সতর্কতা নয়। এটি বাস্তবতা। গাজা এখন শুধু যুদ্ধবিধ্বস্ত নয়, ক্ষুধায় জর্জরিত।

প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি শিশু, প্রতিটি মহল্লা আজ সেই ক্ষুধার মুখোমুখি।

RELATED NEWS

Latest News