গাজা উপত্যকায় শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬১ শতাংশের বেশি ক্ষুধার্ত মানুষ, যারা খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এটি চলমান অবরোধ ও খাদ্য সংকটের ভয়াবহতারই প্রতিফলন।
হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। গাজার আল-শিফা, আল-রান্তিসি, নাসের ও আল-আহলি আরব হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি মানুষ ভর্তি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে করিডোর ও মেঝেতেও শয্যা বিছিয়ে রোগী রাখা হচ্ছে।
শনিবার নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন খাদ্য সহায়তা প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, তারা সাহায্য পেতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন। গ্লোবাল হিউম্যানিটারিয়ান ফ্রন্ট (জিএইচএফ) নামে এক বিতর্কিত সংগঠনের সহায়তা কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, তারা কেবল সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে।
দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের নিকটবর্তী শাকুশ এলাকায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আবু তাহা জানান, ইসরায়েলি সেনারা জনতার দিকে গুলি চালালে দুই পুরুষ ও এক নারী নিহত হন।
অবরোধের কারণে গাজায় ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। শনিবার আল-শিফা হাসপাতালে অনাহারে মারা যান ১৭ বছর বয়সী আতেফ আবু খাতের। পরিবারের ভাষ্যমতে, তার ওজন ৭০ কেজি থেকে নেমে ২৫ কেজিতে এসে দাঁড়ায়, যা সাধারণত নয় বছর বয়সী শিশুর ওজনের সমান।
এদিকে, হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড শনিবার ইসরায়েলি বন্দি এভিয়াতার ডেভিডের নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ডেভিড একটি সরু টানেলে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমি জানি না আজ কী খাবো… কয়েক দিন ধরে কিছু খাইনি… পানি খুবই কম।” ভিডিওর শেষে লেখা ছিল, “শুধু যুদ্ধবিরতিই তাদের জীবিত ফেরাতে পারে।”
গাজায় চলমান সংঘাত ও অনাহার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ থাকলেও, সহিংসতা থামছে না। নিহতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে এবং মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।