গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯ জন ছিলেন যারা ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে আল জাজিরাকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এরই মধ্যে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টিতে মারা গেছেন অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে অনেকেই শিশু। গত কয়েক সপ্তাহেই এই মৃত্যুর হার বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।
ইসরায়েল মার্চ মাসে গাজার ওপর সম্পূর্ণ অবরোধ জারি করে এবং মে মাসের শেষের দিকে সীমিত পরিমাণে সহায়তা প্রবেশ করতে দেয়। এই অবস্থায় ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক মহল থেকে গণহারে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানায়, “খাদ্য সংকটে পরিবারগুলো ভেঙে পড়ছে।” সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “অভিভাবকরা নিজেরাও এতটাই ক্ষুধার্ত যে, সন্তানদের দেখভাল করার মতো শক্তি তাদের নেই। যারা ইউএনআরডব্লিউএর ক্লিনিকে আসছেন, তাদের শরীরে ওষুধ কার্যকর করার মতো সামর্থ্য নেই।”
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ওসিএইচএ) আরও জানায়, ইসরায়েল বারবার সাহায্যবাহী কেন্দ্রগুলোতে তাদের যাচাই কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে।
গাজা শহর থেকে আল জাজিরার হানি মাহমুদ জানান, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। মানুষ যেখানেই কিছু সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে, সেদিকেই ছুটছে।
“গাজা এখন বাধ্যতামূলক দুর্ভিক্ষ, পানি সংকট এবং অনাহারে ভুগছে। স্বাস্থ্য সূত্র জানায়, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে পড়ছে। ফলে রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং শরীরের পক্ষে তা মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে না,” বলেন মাহমুদ।
এই সংকট আরও দীর্ঘ হলে তা এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও, গাজায় জরুরি সহায়তা প্রবেশে জটিলতা কাটছে না। ফলে দিন দিন অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।