ইসরায়েলি নৌবাহিনী বুধবার গাজা উপত্যকার অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা নৌবহর আটক করেছে। এতে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক কর্মী ছিলেন।
ভূমধ্যসাগরে তোলা ফুটেজে দেখা যায়, ইসরায়েলি নৌবাহিনী ৪৭টি নৌযান নিয়ে গঠিত “গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলা”কে ঘিরে ফেলে। আয়োজকদের দাবি, এই নৌবহরে ৫০০ এর বেশি কর্মী ছিলেন, যাদের মধ্যে থানবার্গ অন্যতম। তাকে মাটিতে বসে থাকতে দেখা যায়, পাশে ইসরায়েলি নৌসদস্যরা তার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানায়, নৌবহরের কয়েকটি জাহাজ আটক করা হয়েছে এবং যাত্রীদের নিরাপদে ইসরায়েলি বন্দরে নেওয়া হচ্ছে। পোস্টে বলা হয়, “গ্রেটা ও তার সহকর্মীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।”
নৌবহরে থাকা কর্মীরা “ফ্রি প্যালেস্টাইন” স্লোগান দেন। প্রায় ১০০ মাইল দূরে গিয়ে তাদের যাত্রা শেষ হয়, যা জুন মাসের ব্যর্থ অভিযানের মতোই ফল দিয়েছে।
ফ্লোটিলা সদস্যরা অভিযোগ করেন, আটক করার আগে ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ তাদের যোগাযোগ ও সরাসরি সম্প্রচারের ক্যামেরা ব্যাহত করে দেয়। নৌবহরের এক কর্মী মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য গ্রেগ স্টোকার বলেন, “তারা আমাদের ইঞ্জিন বন্ধ করতে এবং নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে বলছে, না হলে নৌযান বাজেয়াপ্ত করে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জানান, আটককৃতদের আশদোদ বন্দরে নেওয়া হবে এবং পরবর্তীতে বহিষ্কার করা হবে। তিনি বলেন, ইসরায়েল আশ্বাস দিয়েছে যে ফ্লোটিলা আটক করার সময় কোনো সহিংসতা ব্যবহার করা হবে না।
এর আগে ইসরায়েল কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছিল নৌযানগুলো সরাসরি ইসরায়েলে নিয়ে আসার জন্য, যেখানে সামরিক বাহিনী মানবিক সহায়তার দায়িত্ব নিয়ে তা গাজায় পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে কর্মীরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তাদের দাবি, গাজার অবরোধ অবৈধ এবং এর ফলে সাধারণ মানুষ দুর্ভিক্ষ ও malnutrition-এ ভুগছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে এটি একটি মানবিক মিশন। যদি ইসরায়েলি সরকার সাহায্য ঢুকতে দিত, তবে এমন উদ্যোগের প্রয়োজন হতো না।”
অন্যদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এসব কর্মীকে উসকানিদাতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন, ফ্লোটিলার কিছু সদস্যের হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
আটক কর্মীদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া মিললেও পরিস্থিতি কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
