জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সহায়তার খোঁজে অন্তত এক হাজার ৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মে মাসের শেষ দিক থেকে এ পর্যন্ত এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, এর মধ্যে ৯৯৪ জন গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) কেন্দ্রের কাছাকাছি এবং ৭৬৬ জন সরবরাহ কাফেলার পথে নিহত হন। অধিকাংশ হত্যাকাণ্ড ইসরায়েলি সেনারা সংঘটিত করেছে বলে জানানো হয়।
আগের তথ্য অনুযায়ী, ১ আগস্ট জাতিসংঘ জানায়, এ সময় পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৩৭৩ জন নিহত হয়েছিলেন। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে সংখ্যা কয়েকশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬০ জনে।
এদিকে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন মানবিক সহায়তার অপেক্ষায় ছিলেন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনারা জানায়, তারা হামাসের সামরিক সক্ষমতা ভেঙে দিতে অভিযান চালাচ্ছে এবং বেসামরিক হতাহতের ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছে। তবে গাজায় প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে এসব তথ্য যাচাই করতে পারছে না।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন, নতুন করে গাজায় অভিযান চালানোর পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। এর লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করা। সামরিক পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে গাজা শহর ও আশপাশের শরণার্থী শিবির দখল করা, যেগুলো ইতিমধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ।
গত কয়েক দিনে গাজা শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা বেড়েছে। একই সময়ে হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েলি সেনারা আগ্রাসী স্থল অভিযান চালাচ্ছে। শুক্রবারও সেনারা শহরের উপকণ্ঠে নানা ধরনের অভিযান চালায়।
জাতিসংঘ সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। ইসরায়েল মানবিক সহায়তা প্রবেশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করায় এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। এর পর ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬১ হাজার ৮২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। জাতিসংঘ এ তথ্যকে নির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করেছে।