ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৫, ১:৪০ পিএম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলের আংশিক অবরোধ তুলে কিছু খাদ্য সহায়তা গাজায় প্রবেশ করলেও তা জনসাধারণের মাঝে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে একটি ত্রাণ বহরে লুটের চেষ্টা এবং তার পরপরই সংঘটিত সংঘর্ষে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ছয় হামাস নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন।
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (WFP) সমন্বিত একটি ২০ ট্রাকের কনভয় কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজা শহরের দেইর আল-বালাহ এলাকায় যাচ্ছিল। তবে পথে অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা হামলা চালায় এবং হামাস সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় আইডিএফ ড্রোন হামলা চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করে।
ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা “সশস্ত্র হামাস সদস্যদের” লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে হামাস একে “ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ” বলে উল্লেখ করেছে এবং অভিযোগ করেছে, ত্রাণ সুরক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্য করা হয়েছে।
এদিকে, খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো সত্ত্বেও গণমানুষের ক্ষুধা ও বঞ্চনা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে বেকারিগুলোর সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিরাপত্তা না থাকায় বেশিরভাগ বেকারি কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন হলেও গত তিন দিনে মাত্র ১৩০টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এই সহায়তা ‘এক ফোঁটা পানির মতো, যেখানে দরকার ছিল বন্যার মতো সহায়তা’।
স্থানীয়রা বলছেন, বেকড পণ্য নয় বরং পরিবারপ্রতি এক বস্তা করে ময়দা সরবরাহ করা হলে মানুষ তাঁবুতে কিংবা ঘরে নিজে রুটি বানাতে পারতেন, এতে বিশৃঙ্খলা কম হতো।
দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে গঠিত শরণার্থী শিবির থেকে আবদ আল-ফাতাহ হুসেইন জানিয়েছেন, “এখানে বিদ্যুৎ, খাবার, বিশুদ্ধ পানি বা ওষুধ কিছুই নেই। রাতের বোমা হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।”
উত্তর গাজার খান ইউনিসে বাস করা কিশোরী সাবা নাহিদ জানান, “আমরা কোথাও যেতে পারছি না, আমাদের বাড়ি আংশিক ধ্বংস হলেও এখানেই আছি। চারদিকে মানুষ রাস্তায় ঘুমাচ্ছে, খাবার নেই, ময়দা নেই, কোনো মৌলিক চাহিদা নেই।”
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে গাজায় মহামারী আকারে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।