পাটনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি চন্দন মিশ্রকে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, এটি একটি গ্যাং বিরোধের ফল এবং পরিকল্পিত হামলা।
২০১১ সালে ব্যবসায়ী রাজেন্দ্র কেশরী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চন্দনের শাস্তি ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পাটনা হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবনে রূপান্তরিত হয়। তিনি বর্তমানে বেউর সেন্ট্রাল জেলে সাজা খাটছিলেন।
চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি ১৫ দিনের প্যারোলে মুক্তি পেয়ে পাটনার রাজা বাজার এলাকার শাস্ত্রী নগর থানার আওতাধীন পারাস হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তবে চিকিৎসার মাঝেই তার অপরাধী জীবনের অবসান ঘটে।
বৃহস্পতিবার সকালেই পাঁচজন অজ্ঞাত হামলাকারী হাসপাতালে ঢুকে চন্দনের ব্যক্তিগত কক্ষে গিয়ে তাকে লক্ষ্য করে একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। ঘটনার পর তারা পালিয়ে যায়। হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পাটনার এসএসপি কার্তিকেয় কে শর্মা বলেন, “চন্দন মিশ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে হাসপাতালের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।”
আইজি রানা বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং রেকি করেই হামলাটি চালানো হয়েছে।”
চন্দন মিশ্র, যিনি চন্দন সিংহ নামেও পরিচিত, তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, ব্যাংক ও স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে হামলা-সহ ২০টিরও বেশি মামলা ছিল। তিনি আন্তঃরাজ্য স্বর্ণ ডাকাত সন্তোষ সিংহের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে পুলিশ। হাসপাতালের রিসেপশন, প্রবেশ ও প্রস্থান ফটক এবং করিডোরে স্থাপিত ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত ত্বরান্বিত করতে ডগ স্কোয়াড ও ফরেনসিক টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
২০১৪ সালে কলকাতা থেকে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স তাকে গ্রেফতার করেছিল। এরপর তিনি বক্সার, ভাগলপুর এবং সর্বশেষ বেউর জেলে বন্দী ছিলেন।
অসংখ্য অপরাধ ও দীর্ঘ কারাবাসের পরও চন্দন মিশ্র অপরাধ জগত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেননি। এই হামলার মাধ্যমে তার অপরাধ জীবন রক্তাক্ত পরিণতি পেল।