Monday, June 23, 2025
Homeরাজনীতিগাইবান্ধা বিএনপি কমিটিতে অনুপ্রবেশ বিতর্ক, উঠেছে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

গাইবান্ধা বিএনপি কমিটিতে অনুপ্রবেশ বিতর্ক, উঠেছে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জসহ আশপাশের ইউনিয়নে বিএনপির নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংগঠনের অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, এই কমিটিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা অতীতে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন না।

স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে যারা মামলা ও নির্যাতনের মধ্য দিয়ে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মহিমাগঞ্জ, কোচ শহর ও ধাপেরহাট ইউনিয়নে এই অভিযোগ সবচেয়ে বেশি।

বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জহরুল ইসলাম জাহিদকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর হয়ে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন এবং অতীতে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন। এরপরও তাকে নতুন ইউনিয়ন কমিটির প্রথম সারিতে রাখা হয়েছে।

একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে ধাপেরহাট ইউনিয়নের রুহুল আমিনকে নিয়ে। তিনি ২০০১ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসেবে সক্রিয় ছিলেন এবং পরে যুবলীগেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির একজন ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক। তার অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে দলের অভ্যন্তরে তীব্র বিতর্ক চলছে।

পলাশবাড়ি উপজেলা মহিলা দলের নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আরজিনা চাঁদনী। জানা গেছে, তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। তার এই ভূমিকাও দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে তিনি সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিএনপির স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, এসব কমিটিতে আর্থিক লেনদেন ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়নের কারণে দলীয় ভিত্তি দুর্বল হচ্ছে। অন্যদিকে, উপজেলা আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ বলেন, “কমিটিতে যারা আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছে, তাদের বিবেচনা করেই গঠন করা হয়েছে। তবে সামান্য কিছু বিচ্যুতি থাকতেই পারে।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের কাউকে কমিটিতে আনা হয়েছে এমন অভিযোগ প্রমাণসাপেক্ষ। কোনো ভুল হলে সংশোধন করা যেতে পারে।”

তবে স্থানীয় বিএনপি কর্মীদের ভাষ্যমতে, পাঁচ আগস্টের আগে অনেকেই রাজনীতির মাঠে ছিলেন না, হঠাৎ করেই কমিটিতে উঠে এসেছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, এতে দলের দীর্ঘমেয়াদী কাঠামো ভেঙে পড়বে এবং ত্যাগী নেতারা রাজনীতি থেকে বিমুখ হবেন।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গোবিন্দগঞ্জসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নগুলোতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।

RELATED NEWS

Latest News