ঢাকার উত্তরায় মিলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার কুর্মিটোলা প্যারেড গ্রাউন্ডে জানাজা ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানাজায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এবং নৌবাহিনী প্রধানের পক্ষে একজন প্রতিনিধি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৩৫ নম্বর স্কোয়াড্রনের পাইলট ছিলেন। ৭৬ বিএএফএ কোর্সের এই কর্মকর্তা ক্যাডেট থাকা অবস্থায় পিটি-৬ বিমানে ১০০ ঘণ্টা ফ্লাইট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। পরে ১৫তম স্কোয়াড্রনে কাজ করার সময় প্রায় ৬০ ঘণ্টা ফ্লাইট সম্পন্ন করেন।
সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানবাহিনীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটি থেকে একটি রুটিন প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানটি উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের পরপরই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং শেষ পর্যন্ত উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মিলস্টোন স্কুল ও কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুর্ঘটনা এড়াতে এবং জনগণের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তিনি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে বিমানের দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি এবং শেষ পর্যন্ত দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনার পরপরই আহতদের উদ্ধার করে সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং নিকটবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ২৭ বছর। তিনি তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।
মঙ্গলবার তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকারের প্যারেড গ্রাউন্ডে। জানাজা শেষে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
গার্ড অব অনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ)।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের মৃত্যুতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তরুণ এই কর্মকর্তার বীরত্বপূর্ণ চেষ্টাকে সম্মান জানিয়ে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হয়।