নরসিংদীর রায়পুরা পৌর শহরে একটি ভুয়া এনজিওর প্রতারণায় অন্তত ৭০ জন গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ‘সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামে নিজেদের পরিচয় দেওয়া একটি এনজিও প্রায় ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেল ৩টার দিকে পৌর শহরের শ্রীরামপুর এলাকার এনজিও কার্যালয়ে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান গ্রাহকরা। এরপর থেকেই এনজিওটির কোনো কর্মকর্তার খোঁজ মিলছে না।
ভুক্তভোগীরা জানান, তিন দিন আগে একটি ভবনে অফিস ভাড়া নিয়ে এনজিওটি কার্যক্রম শুরু করে। স্থানীয়দের ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং অন্যান্য কাগজপত্র সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে প্রতিটি লাখ টাকার বিপরীতে ১০ হাজার টাকা জামানত নেওয়া হয়। তবে কাউকেই কোনো রসিদ দেওয়া হয়নি।
মনির মিয়া নামের এক গ্রাহক বলেন, “আমি ও আরও পাঁচজন মিলে দুই লাখ টাকা করে ঋণ নিতে গিয়ে ২০ হাজার টাকা জামানত দিয়েছি। আজ টাকা দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এসে দেখি অফিসে তালা। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা নিয়ে পালিয়েছে।”
একই অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া। তিনি বলেন, “চার লাখ টাকার জন্য ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম জামানত। এখন দেখি কার্যালয়েই তালা ঝুলছে। আমরা প্রতারিত হয়েছি।”
একাধিক নারী গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, “কষ্টের টাকা দিয়েছি বিশ্বাস করে। এখন তারা অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ করব।”
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তালাবদ্ধ অফিসের সামনে কান্নারত অবস্থায় গ্রাহকরা ভিড় করেছেন। কেউ কেউ টাকা ফেরতের আকুতি জানাচ্ছেন, কেউ চাচ্ছেন প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি।
এ বিষয়ে ভবনমালিকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, “এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভুক্তভোগীরা দ্রুত তদন্ত এবং কষ্টার্জিত অর্থ ফেরতের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।