ডেইলি প্রতিদিনের বাণী রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৫, ০৪:৪২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইল যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তার জ্বালানি ও অস্ত্র সরবরাহের বড় অংশই এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে। মিত্র দেশগুলোও ইসরাইলের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল।
তবে এখন সেই সমর্থন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডা ইসরাইলের সামরিক অভিযানকে ঘিরে সরাসরি সমালোচনায় নেমেছে।
সম্প্রতি তিনটি দেশ যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরাইলের নতুন হামলা বন্ধ করা প্রয়োজন। তারা বলেছে, গাজায় যুদ্ধ চলতে থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছিলেন, হামাসকে ধ্বংস এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের উদ্ধারের লক্ষ্যে এই অভিযান অপরিহার্য। তবে এই যুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করা মানবিক দিক থেকে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। গাজাবাসীদের জন্য ‘ন্যূনতম’ খাবারের প্রবেশ অনুমোদনকেও অপর্যাপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়।
তিন দেশের সরকার নেতানিয়াহুকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, ৭ অক্টোবরের হামলার পর তারা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছিল। তবে বর্তমানে ইসরাইলের পদক্ষেপগুলো ‘অসমঞ্জসপূর্ণ ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
নেতানিয়াহু পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, লন্ডন, অটোয়া ও প্যারিসের নেতারা ইসরাইলে গণহত্যার প্রতিদান দিচ্ছেন এবং এমন হামলার পথ প্রশস্ত করছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হামাস অস্ত্র ছাড়লে, জিম্মিদের মুক্তি দিলে এবং গাজা বেসামরিকীকরণে সম্মত হলে তবেই যুদ্ধ থামবে।
তিনি বলেন, এর চেয়ে কম কিছুতে কোনো দেশই সম্মত হবে না এবং ইসরাইলও নয়।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক জরিপে গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মানবিক সহায়তার জন্য দ্রুত ও অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা লন্ডনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সম্মেলনে বলেন, “গাজার মানবিক সংকট একটি ট্র্যাজেডি। এখানে আন্তর্জাতিক আইন পদ্ধতিগতভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে এবং পুরো জনগোষ্ঠী অসম সামরিক শক্তির শিকার হচ্ছে।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে ইউরোপীয় দেশগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর বিবৃতি দিয়েছে। তারা স্পষ্টভাবে গাজায় আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, যা তিনি “ইহুদি-বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।