Monday, September 8, 2025
Homeআন্তর্জাতিকফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ভোটে অনিশ্চয়তা

ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ভোটে অনিশ্চয়তা

ফ্রাঁসোয়া বাইরু অপসারণের সম্ভাবনা, ম্যাক্রোঁর সামনে জটিল সিদ্ধান্ত

ফ্রান্সের পার্লামেন্ট সোমবার প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর বিরুদ্ধে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। মাত্র নয় মাস ক্ষমতায় থাকার পরই তিনি পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। এই পরিস্থিতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশটিকে নতুন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে।

বাইরু আকস্মিকভাবে নিজেই আস্থা ভোটের ডাক দেন। এর মূল কারণ ছিল মিতব্যয়ী বাজেট নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থা। বাজেটে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলো আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা বাইরুর সংখ্যালঘু সরকারকে সমর্থন করবে না। ফলে জাতীয় পরিষদের ৫৭৭ এমপির মধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া তাঁর পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে গত ডিসেম্বরে মাত্র তিন মাস দায়িত্বে থাকার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ারকেও আস্থা ভোটে বিদায় নিতে হয়েছিল। বাইরু হতে যাচ্ছেন দ্বিতীয় পরপর প্রধানমন্ত্রী যিনি একই পরিণতির মুখোমুখি।

ম্যাক্রোঁ ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি হবে তাঁর ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন। এবার বাইরু বিদায় নিলে তাঁকে সপ্তম প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে অথবা আগাম নির্বাচনের পথে হাঁটতে হতে পারে। উভয় সিদ্ধান্তই প্রেসিডেন্টের জন্য কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

দেশীয় রাজনীতিতে অস্থিরতার মধ্যেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিয়ে ম্যাক্রোঁ সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু ফ্রান্সের অভ্যন্তরে তাঁর জনপ্রিয়তা ক্রমেই কমছে। সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী ৭৭ শতাংশ নাগরিক তাঁর কাজকে অনুমোদন করেন না, যা এ পর্যন্ত সবচেয়ে কম সমর্থন। অন্য এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৪ শতাংশ ফরাসি চান ম্যাক্রোঁ পদত্যাগ করুন, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ নয়।

রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি সামাজিক উত্তেজনাও বাড়ছে। বামপন্থী সংগঠন “ব্লক এভরিথিং” ১০ সেপ্টেম্বর কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলোও ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।

আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকলেও এতে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী জোট কতটা সুবিধা পাবে তা নিশ্চিত নয়। এদিকে তিনি সোশ্যালিস্ট পার্টির সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সমাজতান্ত্রিক নেতা অলিভিয়ে ফাউরে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং বিকল্প বাজেট প্রস্তাবও দিয়েছেন।

এখনো পরিষ্কার নয় প্রেসিডেন্ট কী সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ফ্রান্সের রাজনীতি সামনে আরও জটিল পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছে।

RELATED NEWS

Latest News