ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু রবিবার নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন। এতে প্রেসিডেন্ট এমমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী রোলাঁ লেস্ক্যুরকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগের সরকারের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী তাদের পদে বহাল রয়েছেন।
লেস্ক্যুর ম্যাক্রোঁর প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী অভিযানের সময় থেকেই তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনি কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন ফরাসি সমাজতান্ত্রিক দলে সক্রিয় ছিলেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নিয়োগ বামপন্থীদের প্রতি সদিচ্ছার ইঙ্গিত, কারণ সামনের বাজেট আলোচনায় ম্যাক্রোঁর সরকারকে বাম দলের সমর্থন বা অন্তত অনুপস্থিতির ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।
ফ্রান্সে বাজেট নিয়ে আলোচনাগুলো ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী জোট, ডানপন্থী ও বামপন্থী—এই তিন শিবিরের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা এখন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।
লেকোর্নুর আগের দুই অর্থমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেয়রু ও মিশেল বার্নিয়ের সংসদীয় বাধার মুখে পদত্যাগ করতে হয়। তারা সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নিলেও সংসদে সমর্থন না পাওয়ায় ব্যর্থ হন। ইউরোজোনের মধ্যে ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি বর্তমানে সবচেয়ে বেশি, যা রেটিং সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের নজরে রয়েছে।
বামপন্থী সংসদ সদস্য এরিক কোকেরেল মন্তব্য করেছেন, “এটা বেয়রুর সরকার বেয়রু ছাড়া, নীতিও একই থাকবে।”
পূর্বের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মেয়ারকে এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি কোভিড মহামারির সময় ফ্রান্সের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দেন। এখন ইউরোপীয় নিরাপত্তা জোরদারে ফ্রান্সের ভূমিকা নির্ধারণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
আরো পড়ুন: ফ্রান্সে নতুন সরকার ঘোষণা, রাজনৈতিক সংকট কাটাতে ম্যাক্রোঁর কঠিন পরীক্ষা
কিন্তু ডানপন্থী নেতা মেরিন লে পেন বলেছেন, “একই নীতির সরকারে অর্থনীতিকে ধ্বংস করা ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। এটি করুণ এক সিদ্ধান্ত।”
বিদেশ, স্বরাষ্ট্র ও বিচার মন্ত্রণালয়ে আগের মন্ত্রীরা যথাক্রমে জ্যাঁ-নোয়েল ব্যারো, ব্রুনো রেতাইয়ো ও জেরাল্ড দারমানিন তাদের পদে বহাল রয়েছেন।
৫৮ বছর বয়সী লেস্ক্যুরের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ—বাম দলের আস্থা অর্জন, ম্যাক্রোঁর ব্যবসাবান্ধব ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখা এবং সংসদে রক্ষণশীলদের সমর্থন ধরে রাখা।
অর্থনীতিতে অভিজ্ঞ এই ফরাসি-কানাডিয়ান আগে ন্যাটিক্সিস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে জ্যেষ্ঠ নির্বাহী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বামপন্থীদের দাবি মেনে একটি সম্পদ করের প্রস্তাব দিয়েছেন, যদিও ব্যবসায়ীদের সম্পদ এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
লেস্ক্যুর বলেছেন, তিনি সংবিধানের বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে সংসদের ভোট ছাড়াই বাজেট পাস করাবেন না।