ফেনী জেলার মোহুরী ও সেলোনিয়া নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও ফুলগাজী উপজেলায় ভাঙন ও প্লাবনে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে।
বুধবার সর্বশেষ পূর্বাভাসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নদীগুলোর পানি একই উচ্চতায় থাকতে পারে এবং ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
তবে ফুলগাজী উপজেলার অন্তত ১৪টি গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
ফুলগাজী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা ইসলাম জানান, “উপজেলার অন্তত সাতটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে অন্তত ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন এবং তাদের জন্য শুকনো ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে, টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে ফেনী-পরশুরাম সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে ফুলগাজী ও পরশুরামের সঙ্গে ফেনীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চাগলনাইয়া-খন্দলহাই সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে এখন। তবে সীমিত যানবাহন এবং অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।
অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিকআপ ভ্যানে চড়ে ফেনী শহরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, “মোহুরী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবারের তুলনায় পানি কিছুটা কমলেও ফুলগাজী ও পরশুরামের বেশ কিছু গ্রাম এখনো প্লাবিত।”
তিনি আরও বলেন, বেশ কিছু বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এসব এলাকার লোকজনের দুর্ভোগ বাড়ছে এবং নদীর পানির উচ্চতা স্থিতিশীল থাকলেও তাৎক্ষণিক উন্নতির সম্ভাবনা নেই।
স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।