হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাইসেন্সধারী আগ্নেয়াস্ত্রের গুলি পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রবিবার (২৯ জুন) তাঁর ব্যাগ থেকে একটি লাইভ অ্যামুনিশনের ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগিব সামাদ।
এ ঘটনার পর রাতেই নিজের ফেসবুক পোস্টে ম্যাগাজিন থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আসিফ জানান, এটি “অসাবধানতাবশত প্যাক” হয়ে গেছে।
তবে অস্ত্র ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত বিধিমালার আওতায় লাইসেন্স পেতে যে কয়েকটি মৌলিক শর্ত পূরণ করতে হয়, তার মধ্যে আসিফের কিছু গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা ঘাটতির অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ৩০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। আবেদনকারীকে হতে হবে শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম এবং তিন বছর ধরে যথাক্রমে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা (পিস্তল, রিভলভার, রাইফেলের জন্য) বা ১ লাখ টাকা (শটগানের জন্য) আয় থাকতে হবে। সেই সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক প্রদত্ত আয় সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা আসিফের বর্তমান বয়স ২৬ বছর, যা অস্ত্র লাইসেন্সের নির্ধারিত ন্যূনতম বয়সের চার বছর কম।
এ নিয়ে তদন্ত সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের এক ফেসবুক পোস্টে প্রশ্ন তোলেন, “আসিফ যেহেতু বলছেন তার অস্ত্রটি বৈধ, তাহলে তার আবেদনপত্রে আয় ও বয়স সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক শর্তগুলো পূরণ হয়েছে কি?”
তিনি আরও লেখেন, “ধরে নিলাম তার বয়স ৩০ পেরিয়েছে, তবুও কি তিনি এনবিআরের শংসাপত্রসহ টানা তিন বছরের আয়কর দাখিল করেছেন? সেটাই এখন জানার বিষয়।”
জুলকারনাইন দাবি করেন, যদি আসিফ মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো ছাড় পান, তাহলে তার অস্ত্র কেনা ও আর্থিক উৎস সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা থাকা উচিত।
আসিফ তার ফেসবুক পোস্টে জানান, “এতে কিছুই বেআইনি বা ইচ্ছাকৃত ছিল না। নিরাপত্তার কারণেই আমি অস্ত্র ব্যবহার করি।”
তবে এসব ব্যাখ্যা সত্ত্বেও প্রশ্ন উঠেছে, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জন্য কি আলাদা সুবিধা কার্যকর হচ্ছে? সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে যেসব কঠিন শর্ত থাকে, তা কি তাঁদের জন্য শিথিল হচ্ছে?
সরকারি সূত্রে এসব প্রশ্ন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে খণ্ডন করা হয়নি।