Monday, July 7, 2025
Homeবিনোদনবিক্রি হলো মুম্বাইয়ের ফিল্মিস্তান স্টুডিও, জায়গায় গড়ে উঠবে ৫০ তলা বিলাসবহুল আবাসন

বিক্রি হলো মুম্বাইয়ের ফিল্মিস্তান স্টুডিও, জায়গায় গড়ে উঠবে ৫০ তলা বিলাসবহুল আবাসন

৮২ বছরের পুরনো চলচ্চিত্র কেন্দ্রটি ১৮৩ কোটিতে কিনেছে আর্কেড ডেভেলপারস

মুম্বাইয়ের গোরেগাঁওয়ে অবস্থিত ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ফিল্মিস্তান স্টুডিও অবশেষে বিক্রি হয়ে গেছে। ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টুডিওটি ১৮৩ কোটি টাকায় কিনে নিয়েছে মুম্বাইয়ের রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান আর্কেড ডেভেলপারস।

সাংবাদিক সম্মেলনে আর্কেড ডেভেলপারসের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমিত জৈন জানান, “ফিল্মিস্তান স্টুডিও মুম্বাইয়ের ইতিহাস ও আবেগের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই স্থানে আমাদের পরিকল্পনা একটি ৫০ তলা বিলাসবহুল আবাসিক টাওয়ার নির্মাণের। এখানে থাকবে ৩, ৪ ও ৫ বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট, পেন্টহাউস এবং আধুনিক কিচেনসহ সকল সুযোগ-সুবিধা।”

ফিল্মিস্তান স্টুডিওর মোট চার একর জমিতে গড়ে উঠবে এই আবাসিক প্রকল্প, যার বাজারমূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। নির্মাণ কাজ শুরু হবে ২০২৬ সালে।

একটি যুগের অবসান

চলচ্চিত্র পরিচালক হিমাংশু রায় ও অভিনেত্রী দেবিকা রানী যখন মালাডে বম্বে টকিজ প্রতিষ্ঠা করেন, তখন থেকেই বলিউডে আধুনিক স্টুডিওর ধারণা জন্ম নেয়। রায়ের মৃত্যুর পর শশাধর মুখার্জী, রাই বাহাদুর চুনিলাল, অভিনেতা অশোক কুমার ও জ্ঞান মুখার্জী একত্র হয়ে তৈরি করেন ফিল্মিস্তান। অর্থসাহায্য করেন হায়দরাবাদের নিজাম ওসমান আলি খান।

এই স্টুডিওতে তৈরি হয়েছে ‘চল চল রে যুবক’, ‘শিকারি’, ‘আনন্দ মঠ’, ‘অনারকলি’, ‘নাগিন’, ‘জাগৃতি’, ‘পেয়িং গেস্ট’, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’সহ বহু সুপারহিট ছবি। টিভি রিয়েলিটি শো ‘ঝলক দিখলা যা’ সহ অসংখ্য বিজ্ঞাপনচিত্রও এখানে ধারণ করা হয়েছে।

আবেগঘন প্রতিক্রিয়া

বিখ্যাত অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন একবার তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেছিলেন, “ফিল্মিস্তান স্টুডিওতে শুটিং করেছিলাম। এই স্টুডিওতে আমার জীবনের নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যেখানে প্রত্যাখ্যান, সাফল্য ও ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।”

চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজকেরা এই বিক্রির খবরে স্মৃতিমেদুর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ইতিহাস থেকে বর্তমান

১৯৫৮ সালে সৃজনশীল মতপার্থকের কারণে শশাধর মুখার্জী ফিল্মিস্তান ছেড়ে চলে যান এবং পাশেই গড়ে তোলেন ফিল্মালায়া স্টুডিও।

ফিল্মিস্তানের এক সময়কার আর্থিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন টোলারাম জালান। এভাবেই স্টুডিওটি একাধারে ব্যবসা ও সৃষ্টির মিলনস্থলে পরিণত হয়েছিল।

বর্তমানে মুম্বাইয়ের প্রতিটি ঐতিহাসিক স্থান নতুন আবাসিক স্থাপনায় রূপান্তরিত হচ্ছে। ফিল্মিস্তান স্টুডিওর এই রূপান্তর সেই ধারাবাহিকতাকেই প্রতিফলিত করে।

একটি যুগের সমাপ্তি ঘটলেও এই জমির নতুন যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে নগরায়নের এক নতুন অধ্যায়ে।

  • বিষয়াদি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
  • ভারত

RELATED NEWS

Latest News