১৯৯৬ সালে ‘রাজা হিন্দুস্তানি’ ছবির বিশাল সাফল্যের পর, আমির খান তার ছোট ভাই ফয়সাল খানকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই বছরের মধ্যে প্রযোজক গণেশ জৈন ‘মেলা’ ছবির কাজ শুরু করেন, যেখানে আমির ও ফয়সাল গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন।
কিন্তু ছবির শুটিং চলাকালীন আমির ও পরিচালক ধর্মেশ দারশনের মধ্যে সৃজনশীল মতবিরোধ দেখা দেয়। আমির তার নিজস্ব কিছু দৃশ্য অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে পরিচালক একমত হননি। ফলে ছবির কাজ বাধাগ্রস্ত হয় এবং অনেক বিলম্বের পর ২০০০ সালে মেলা মুক্তি পায়। সিনেমাটি প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।
ফয়সালের জন্য ‘মেলা’ ছিল দ্বিতীয় সুযোগ বলিউডে নিজের জায়গা করে নেওয়ার, তবে সিনেমার গোলযোগ এবং বিরোধের কারণে তার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীকালে ফয়সালের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা বিতর্ক সামনে আসে, যেগুলোতে সে পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফয়সাল ২৫ বছর আগে ‘মেলা’র পেছনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি আমির ও পরিবারের ওপর মানসিক সমস্যার চিকিৎসায় ভুল ওষুধ প্রয়োগের দায় চাপিয়েছেন। তিনি তার শারীরিক ও মানসিক সংগ্রামের বর্ণনা দিয়েছেন এবং পরিবারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছেন।
১৯৯৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই দুই ভাইয়ের মধ্যে নানা আদালতীয় ও পারিবারিক বিতর্ক চলেছে। সম্প্রতি ফয়সালের নতুন অভিযোগের পর আমির খান ও পরিবারের সদস্যরা যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ফয়সালের করা নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্যে আমরা গভীরভাবে আহত। আমাদের মা জীনাত তাহির হুসাইন, বোন নিকহাত হেগড়ে এবং আমিরের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়। ফয়সাল আগেও এই ঘটনা ভুলভাবে তুলে ধরেছে।”
পরিবারের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ফয়সালের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত পরিবার ও চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে নেয়া হয়েছে, সবসময় তার মঙ্গল এবং মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় রেখে। তারা মিডিয়াকে এই ব্যক্তিগত বিষয়গুলো স্পর্শকাতরভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন।
বিগত সময়ে ফয়সাল ও আমিরের সম্পর্কের উত্তেজনা বলিউডের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এই নতুন বিবৃতি বিতর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করেছে।
এই ঘটনার মধ্যে পরিবারের ঐক্য ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং বিষয়টি জনমনে অস্বস্তি তৈরি করেছে।