গাড়ির গতি, হুইলের ঘূর্ণি আর অ্যাকশনের রোমাঞ্চ নিয়ে বড় পর্দায় বরাবরই দর্শকদের মুগ্ধ করেছে রেসিং ঘরানার সিনেমা। সময়ের পরিক্রমায় এগুলো হয়েছে আরও সাহসী, আরও প্রযুক্তিনির্ভর।
১৯৬০-এর দশকে ‘গ্র্যান্ড প্রিক্স’ এর চমকপ্রদ দৃশ্য ও ‘দ্য লাভ বাগ’-এর মানবিক গাড়ি হার্বির মাধ্যমে রেসিং সিনেমার যাত্রা শুরু। এরপর ‘লে মানস’ (১৯৭১), ‘দ্য ক্যাননবল রান’ (১৯৮১) এবং টম ক্রুজ অভিনীত ‘ডেজ অব থান্ডার’ (১৯৯০) চলচ্চিত্রগুলো গতি ও নাটকীয়তার সংমিশ্রণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ‘ফাস্ট অ্যান্ড দ্য ফিউরিয়াস’ (২০০১) সিরিজ হয়ে ওঠে রেসিং ঘরানার অন্যতম চমকপ্রদ উপস্থাপন। ভিন ডিজেল ও পল ওয়াকার জুটির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেছে বিশ্বব্যাপী।
Disney ও Pixar তাদের ‘Cars’ (২০০৬) ফ্র্যাঞ্চাইজিতে শিশুবান্ধব চরিত্র ও বুদ্ধিদীপ্ত কৌতুক সংযোজন করে রেসিংকে জনপ্রিয় করে তোলে পরিবারের সবার কাছে। অন্যদিকে, অ্যাডাম ম্যাককে পরিচালিত ও উইল ফ্যারেল অভিনীত ‘টালাডেগা নাইটস’ একই বছর দর্শকদের উপহার দেয় হাস্যরস ও প্রতিযোগিতার সংমিশ্রণ।
সাম্প্রতিক সময়ে বাস্তব ঘটনাবলির ওপর ভিত্তি করে নির্মিত ‘রাশ’ (২০১৩) এবং ‘ফোর্ড ভার্সেস ফেরারি’ (২০১৯) দর্শকদের জন্য রেসিংয়ের জগতে গভীর আবেগ ও ইতিহাসের ছোঁয়া নিয়ে আসে।
২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গ্রান ট্যুরিসমো’ ও Apple Original Films প্রযোজিত ‘F1: দ্য মুভি’ এই ধারাবাহিকতায় যোগ করেছে নতুন মাত্রা।
‘F1: দ্য মুভি’ পরিচালনা করেছেন ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’ খ্যাত জোসেফ কোসিনস্কি। এতে ব্র্যাড পিট অভিনয় করছেন এক অবসরপ্রাপ্ত ফর্মুলা ওয়ান চালকের চরিত্রে, যিনি জোশুয়া পিয়ার্স (ড্যামসন ইদ্রিস) নামে এক তরুণ রেসারকে প্রশিক্ষণ দিতে ফিরে আসেন ট্র্যাকে।
এই ছবির চমক হলো বাস্তব জীবনের রেসার লুইস হ্যামিলটনের সম্পৃক্ততা, যিনি প্রযোজকের ভূমিকায় কাজ করেছেন এবং চলচ্চিত্রে বাস্তব F1 ড্রাইভারদের উপস্থিতিও রয়েছে।
রেসিং সিনেমা শুধুই গতির প্রতিযোগিতা নয়, এগুলোর ভেতর দিয়ে ফুটে উঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, সাহস, আত্মত্যাগ ও পারিবারিক বন্ধনের গল্প। ‘গ্র্যান্ড প্রিক্স’ থেকে শুরু করে ‘F1: দ্য মুভি’ পর্যন্ত এসব চলচ্চিত্র দর্শকদের নিয়ে গেছে নানা সময়ের উত্তেজনায় ভরপুর ট্র্যাকে।
রেসিংপ্রেমী দর্শকদের জন্য এই সিনেমাগুলো শুধু বিনোদন নয়, বরং একেকটি থ্রিলিং অভিজ্ঞতা। গাড়ির শব্দ, গতি ও উত্তেজনার ভেতর দিয়ে এগুলোর গল্প বলেছে মানুষের সাহস ও স্বপ্নের।
