Wednesday, July 30, 2025
Homeজাতীয়জুলাই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার সাবেক আইজিপির, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হচ্ছেন

জুলাই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার সাবেক আইজিপির, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হচ্ছেন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হতে রাজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

জুলাই–আগস্টে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে স্বীকার করেছেন যে তিনি এই অপরাধে জড়িত ছিলেন। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি বলেন, “আমি জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলাম।”

এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামও রয়েছে অভিযুক্ত তালিকায়। আদালতে অভিযোগপত্র পাঠ করার পর চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “আমি অভিযোগ শুনেছি। আমি দোষী। আমি আদালতে জুলাই ঘটনার সব কিছু বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করতে চাই।”

আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী (স্টেট অ্যাপ্রুভার) হিসেবে গ্রহণ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আদালত সাধারণত দোষ স্বীকার করে সত্যতা প্রকাশে আগ্রহী কোনো অভিযুক্তকে এই ধরনের সুযোগ দিয়ে থাকে।

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে একজন অভিযুক্তকে তার নিজের ভূমিকা এবং অন্যদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সম্পূর্ণ তথ্য আদালতে দিতে হয়। আদালত চাইলে তাকে ক্ষমা করতে পারে বা শাস্তি হ্রাস করতে পারে।

এর আগে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়ও হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় সে সুযোগ আর কাজে আসেনি।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়ার কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। সহ-অভিযুক্তরা সাধারণত এদের বিশ্বাসঘাতক মনে করে, যার ফলে কারাগারে তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। তাই রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাধারণত আলাদা সেলে রাখা হয়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের মুখপাত্র জান্নাতুল ফারহাদ জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত আদালত থেকে আলাদা সেলে রাখার কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে অন্য এক কারা সূত্র নিশ্চিত করেছে যে সাবেক আইজিপিকে আলাদা সেলে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং তার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ জানান, “চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হতে সম্মত হয়েছেন। আদালত যদি তার সাক্ষ্যে সন্তুষ্ট হয়, তাহলে তাকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “বিকল্পভাবে তাকে লঘু শাস্তি দেওয়া হতে পারে। তবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না। শেষ সিদ্ধান্ত আদালতের।”

RELATED NEWS

Latest News