Thursday, October 16, 2025
Homeআন্তর্জাতিকইউরোপে নতুন অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে মতভেদ, দায়িত্ব ভাগ নিয়ে দ্বিধায় সদস্যদেশগুলো

ইউরোপে নতুন অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে মতভেদ, দায়িত্ব ভাগ নিয়ে দ্বিধায় সদস্যদেশগুলো

আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ না করে অর্থ সহায়তা দিতে আগ্রহী অধিকাংশ দেশ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন অভিবাসন আইন বাস্তবায়নের আগেই সদস্যদেশগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। কে কতটা দায়িত্ব নেবে, তা নিয়ে মঙ্গলবার লুক্সেমবার্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশগুলোর মধ্যে স্পষ্ট মতভেদ দেখা যায়।

অভিবাসন ও স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রীরা বৈঠকে তথাকথিত “রিটার্ন হাব” ও সীমান্ত পেরিয়ে বহিষ্কার সংক্রান্ত ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করেন। তবে আলোচনার মূল বিষয় ছিল কোন দেশ কতজন আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ করতে পারবে।

ইউরোপীয় কমিশন বুধবার জানাতে কথা ছিল কোন দেশগুলো অভিবাসনের চাপে আছে এবং তারা কী ধরনের সহায়তা পাবে, তবে সিদ্ধান্তটি পিছিয়ে গেছে।

২০২৩ সালে গৃহীত নতুন ইইউ অভিবাসন ও আশ্রয় আইন অনুযায়ী, আগামী জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন শেষ করতে হবে। আইন অনুযায়ী, অভিবাসনের চাপে থাকা দেশগুলোকে অন্য সদস্যরাষ্ট্রগুলো হয় আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ করবে, না হয় অর্থ ও জনবল সহায়তা দেবে।

অর্থ দিতে রাজি, আশ্রয় নয়

বেলজিয়ামের অভিবাসনমন্ত্রী অ্যানলিন ভ্যান বসুইত বলেন, তাদের দেশ আশ্রয়প্রার্থী নিতে পারবে না, তবে আর্থিক সহায়তা দেবে কারণ “বর্তমান ব্যবস্থাটি পূর্ণ।”

ফিনল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মারি রান্তানেন স্পষ্টভাবে বলেন, তার দেশ “অন্য ইইউ সদস্যদেশ থেকে কোনো অভিবাসী নেবে না।”

নেদারল্যান্ডসও আশ্রয়প্রার্থী না নিয়ে আর্থিক অবদান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুইডেনের অভিবাসনমন্ত্রী জোহান ফোরসেল জানান, তার দেশ ইতিমধ্যে গত দশকে “অত্যধিক” আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ করেছে।

বাস্তবায়নে জটিলতা ও রাজনৈতিক প্রভাব

বিশ্লেষকদের মতে, অধিকাংশ দেশ যদি আশ্রয়প্রার্থী নিতে অস্বীকৃতি জানায়, তবে “অফসেট সিস্টেম” কার্যকর হতে পারে। এতে তারা আশ্রয়প্রার্থীদের স্থানান্তর না করে আবেদন প্রক্রিয়া পরিচালনায় সহায়তা করবে।

ইতালি ও গ্রিস—যাদের অভিবাসনের চাপ সবচেয়ে বেশি—পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী (ডাবলিন রুলস) নির্ধারিত সংখ্যা অনুযায়ী আশ্রয়প্রার্থী প্রক্রিয়াকরণে ব্যর্থ হয়েছিল।

ডেনমার্কের অভিবাসনমন্ত্রী রাসমুস স্টকলুন্ড জানান, সদস্যদেশগুলো অন্য দেশের গৃহীত আশ্রয় সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলকভাবে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি।

ইইউর অভিবাসন কমিশনার ম্যাগনাস ব্রুনার বলেন, “সময়ের গুরুত্ব এখন সবচেয়ে বেশি,” কারণ আগামী জুনেই নতুন আইন কার্যকর হওয়ার সময়সীমা শেষ হচ্ছে।

ইউরোপীয় ঐক্যের ঝুঁকি

ইউরোপীয় পলিসি সেন্টারের বিশ্লেষক আলবার্তো-হর্স্ট নিডহার্ট বলেন, যদি সদস্যদেশগুলো নিজ হাতে গৃহীত চুক্তি বাস্তবায়ন না করে, তবে “পুরো ইউরোপীয় আশ্রয় ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, এতে “শেনগেন অঞ্চলে অভ্যন্তরীণ সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসবে” এবং বহিরাগত সীমান্তে “বেআইনি প্রত্যাখ্যান” বাড়বে।

নিডহার্টের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০১৫ সালের অভিবাসন সংকটের সময়ের তুলনায় “অধিক স্বার্থান্বেষী” ও বিভক্ত।

RELATED NEWS

Latest News