২০২৫ সালের গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে হলিউড বক্স অফিসে মিলছে মিশ্র সাড়া। পিক্সারের নতুন অ্যানিমেটেড ছবি ‘Elio’ উদ্বোধনী সপ্তাহে মাত্র ২১ মিলিয়ন ডলার আয় করে, যা পিক্সারের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ওপেনিং।
অন্যদিকে, ‘হাও টু ট্রেইন ইউর ড্রাগন’-এর লাইভ অ্যাকশন সংস্করণ দ্বিতীয় সপ্তাহেও টপ চার্টে শীর্ষে অবস্থান করছে।
শীর্ষে ‘ড্রাগন’, দ্বিতীয় সপ্তাহেও আয় ৩৭ মিলিয়ন ডলার
ড্রিমওয়ার্কসের জনপ্রিয় অ্যানিমেশন অবলম্বনে নির্মিত এই ছবি যুক্তরাষ্ট্রে দুই সপ্তাহে আয় করেছে ১৬০.৫ মিলিয়ন ডলার। বিশ্বব্যাপী আয় দাঁড়িয়েছে ৩৫৮.২ মিলিয়ন ডলারে।
অন্যদিকে, বহুল প্রতীক্ষিত হরর সিকুয়েল ‘২৮ ইয়ার্স লেটার’ যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ মিলিয়ন আয় করলেও প্রত্যাশার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। ছবিটি বিশ্বজুড়ে প্রথম সপ্তাহে মোট আয় করেছে ৬০ মিলিয়ন ডলার।
‘এলিও’: পিক্সারের নতুন ইতিহাস, তবে হতাশাজনক
‘এলিও’ নিয়ে প্রথমে আশা ছিল কমপক্ষে ৩০ মিলিয়ন আয় হবে। পরে ডিজনি নিজেদের পূর্বাভাস কমিয়ে ২০–২৫ মিলিয়নে নামিয়ে আনে।
এ ছবিটি একটি কিশোর ছেলের গল্প, যে মহাকাশে ভ্রমণের স্বপ্ন দেখে এবং একসময় এলিয়েনদের সঙ্গে দেখা হয়।
অ্যানিমেটেড এই ছবিটি সমালোচকদের মধ্যে ভালো সাড়া পেলেও দর্শকদের আগ্রহ কম দেখা গেছে। ফলাফল, পিক্সারের প্রথম ফিল্ম ‘টয় স্টোরি’ (১৯৯৫) ও ‘এলিমেন্টাল’ (২০২৩)-এর নিচে চলে গেছে এ ছবির ৩-দিনের উদ্বোধনী আয়।
তবে ডিজনি ও পিক্সার আশাবাদী, স্কুল ছুটির সময় এলিও দীর্ঘমেয়াদে ভালো আয় করতে পারবে।
করোনার পর থেকে ‘অরিজিনাল’ অ্যানিমেশন সংকটে
২০১৭ সালের ‘কোকো’র পর থেকে কোনো অরিজিনাল অ্যানিমেটেড ছবি যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ মিলিয়ন ওপেনিং পার করেনি।
করোনাকালে ডিজনির তিনটি পিক্সার ফিল্ম—‘লুকা’, ‘টার্নিং রেড’ ও ‘সোল’ সরাসরি ডিজনি প্লাসে মুক্তি দেওয়া হয়, যা দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহ বিমুখ করে।
তবে গত বছরের ব্লকবাস্টার ‘ইনসাইড আউট ২’ প্রমাণ করে, ভালো কনটেন্ট ও পরিচিত আইপি এখনও ব্যাপক দর্শক টানতে পারে।
অন্য ছবিগুলোর অবস্থান
লাইভ অ্যাকশন ‘লিলো অ্যান্ড স্টিচ’ এখনও ভালো করছে। এটি পঞ্চম সপ্তাহেও আয় করেছে ৯ থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার।
প্যারামাউন্টের ‘মিশন ইম্পসিবল – দ্য ফাইনাল রেকনিং’ ৬.৬ মিলিয়ন ডলার আয় করে তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
বিশেষ ধরনের রোমান্টিক ছবি ‘ম্যাটেরিয়ালিস্টস’ দ্বিতীয় সপ্তাহে আয় করেছে ৫.৮ মিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষণ
বক্স অফিস বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবারের জন্য নির্মিত ছবির ভিড়ে একঘেয়েমি দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া হরর ঘরানাতেও জমে উঠেছে প্রতিযোগিতা।
যদিও ‘২৮ ইয়ার্স লেটার’ পরিচালকের ক্যারিয়ারে সেরা উদ্বোধনী আয়, তবে এটি লাভজনক করতে হলে ছবিটিকে এখন আরও কয়েক সপ্তাহ ভালো ব্যবসা করতে হবে।
দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী, এটি পোস্টট্র্যাক স্কোরে ভালো ফল করছে এবং সিনেমাস্কোর অনুযায়ী ‘বি’ গ্রেড পেয়েছে, যা হরর ঘরানায় ইতিবাচক।
‘এলিও’ হয়তো শুরুতে পিছিয়ে থাকলেও, স্কুলছুটির মৌসুমে দীর্ঘমেয়াদে তার অবস্থান শক্ত করতে পারে। অন্যদিকে ‘ড্রাগন’ ছবির সাফল্য আবারো প্রমাণ করেছে, পরিচিত গল্প ও সংলগ্ন নির্মাণ দর্শকদের হলে টানতে এখনও সক্ষম।
এদিকে, পিক্সার ও ডিজনির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে নতুন গল্প ও শ্রোতার সঙ্গে আরও দৃঢ় সংযোগ স্থাপনের ওপর।