ইকুয়েডরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সান্তা লুসিয়া শহরের একটি নাইটক্লাবের বাইরে বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত আটজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। রবিবার পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় সময় শনিবার ভোর ১টা ১৫ মিনিটে দুইটি পিকআপ ট্রাকে আগত বন্দুকধারীরা নাইটক্লাবের বাইরে থাকা লোকজনের ওপর গুলি চালায়। সান্তা লুসিয়া শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার।
স্থানীয় পুলিশ কর্নেল হাভিয়ার চাঙ্গো এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাতটি মৃতদেহ ও কয়েকজন আহত মানুষ পান। হাসপাতালে একজন আরও মারা গেলে নিহতের সংখ্যা আটে দাঁড়ায়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন নাইটক্লাবের মালিক জর্গে উরকুইজো, যিনি সান্তা লুসিয়ার মেয়রের ভাই।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৮০০ কার্ট্রিজ উদ্ধার করেছে। বন্দুকধারীরা গুলি চালানোর পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে অজানা পথ ধরে পালিয়ে যায়।
পুলিশ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার করেছে যিনি একটি ট্রাক চালাচ্ছিলেন এবং যার কাছ থেকে একটি রিভলভার পাওয়া গেছে। তবে তার এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এখনো নিশ্চিত হয়নি।
হামলার পেছনের কারণ সম্পর্কে পুলিশের কাছে এখনও কোনো তথ্য নেই। মৃতদেহগুলো নিকটবর্তী ডাউলে শহরের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সান্তা লুসিয়ার মেয়র উবাল্দো উরকুইজো তাঁর অফিসের পক্ষ থেকে এক শোকবার্তায় এই নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ইকুয়েডর একসময় শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে কোলোম্বিয়া ও পেরুর মতো কোকেইন উৎপাদনকারী দেশের প্রতিবেশী হিসেবে এখানে সম্প্রতি গ্যাং সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। গ্যাংগুলো মেক্সিকো ও কোলোম্বিয়ার কার্টেলের সঙ্গে সংযুক্ত।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৭০ শতাংশ কোকেইন এখন ইকুয়েডরের বন্দর দিয়ে পরিবহন করা হয়। গুয়াস প্রদেশসহ চারটি এলাকায় গত কয়েক মাসে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে গ্যাং সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের জন্য।
তবে সামরিক উপস্থিতি বেড়ে গেলেও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ৪ হাজার ৫১টি হত্যাকাণ্ড রেকর্ড করা হয়েছে, যা ইকুয়েডরের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সর্বাধিক।
এই হত্যাকাণ্ড দেশের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার দিকেই ইঙ্গিত করে।