স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (১২ মে) রাত সোয়া ৯টায় এ সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসে সচিব জানান,
“স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের আলোকে কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রজ্ঞাপনের আলোকে আমাদের পক্ষ থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গেজেট কপি বিজি প্রেস থেকে সংগ্রহ করা যাবে।”
নিষিদ্ধ নয়, তবে কার্যক্রম বন্ধ: আইনি দিক থেকে ব্যাখ্যা
সচিব আখতার আহমেদ জানান,
“সরকার দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করলেও দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তাই নিবন্ধন বাতিল না করে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।”
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আব্দুর রহমানেল মাছউদ ও ইসি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আইনি দিক বিশ্লেষণে উঠে আসে,
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর ৯০ (জ) অনুচ্ছেদ ১ (খ) অনুসারে সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ দলের নিবন্ধন বাতিল করার বিধান রয়েছে।
তবে যেহেতু এখনো দলকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি, তাই নির্বাচন কমিশন ‘স্থগিত’ সিদ্ধান্তে এসেছে।
নিবন্ধন স্থগিত হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না
এই সিদ্ধান্তের ফলে আওয়ামী লীগ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় নির্বাচন বা উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। দলটির নিবন্ধন নম্বর ছিল ৬, প্রতীক ছিল নৌকা। নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯।
পূর্বপটভূমি: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন
সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যেখানে বলা হয়:
“বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলো।”
এই প্রজ্ঞাপন জারির পরই ইসি নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়।