নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইট থেকে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের প্রতীক ‘নৌকা’ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক চাপে নয়, বরং জনমনে বিভ্রান্তি রোধে প্রশাসনিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ বলেন, “এটি একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। জনগণের মধ্যে প্রতীকটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছিল। সে কারণে এটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, গেজেট ও নির্বাচনী সময়সূচিতে ‘নৌকা’ এখনও সংরক্ষিত প্রতীক হিসেবে থাকবে এবং অন্য কোনো দল এটি ব্যবহার করতে পারবে না।
এর আগে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিস্টেম ম্যানেজার মো. রফিকুল হক ঢাকাট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন যে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওয়েবসাইট হালনাগাদ করা হয়েছে।
বুধবার সকাল পর্যন্ত ইসির ওয়েবসাইটে আওয়ামী লীগকে “নিবন্ধন স্থগিতপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দল” হিসেবে তালিকাভুক্ত রাখা হলেও, তার পাশে আর নৌকা প্রতীক দেখা যায়নি।
এই পদক্ষেপটি আসে এমন সময়ে, যখন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত এবং দলটির বিরুদ্ধে চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে একটি কড়া পোস্ট দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা কীভাবে অভিশপ্ত নৌকা প্রতীকটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেন? এটা কি কোনো গণঅভ্যুত্থানে প্রতিক্রিয়া জানানোর উপায়?”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১২ মে থেকে দলের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে।
এর আগেও নির্বাচন কমিশনার আবদুর রশিদ এল মাহসুদ বলেছিলেন, প্রতীক দলীয় মালিকানাধীন নয়, এটি ইসির সম্পত্তি। তাই নৌকা প্রতীক অবিলম্বে বাতিল করা হবে না।
তবে প্রতীকটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতীক ব্যবস্থাপনা এবং সংবিধানিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রতীক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও সুস্পষ্ট নীতিমালা ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন, বিশেষ করে রাজনৈতিক উত্তাল সময়ে।