নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০২৫ সালের রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য প্রস্তাবিত নির্বাচনী আচরণবিধির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করেছে এবং ১০ জুলাইয়ের মধ্যে জনসাধারণের মতামত আহ্বান করেছে।
রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, খসড়াটি তাদের ওয়েবসাইট ecs.gov.bd-তে প্রকাশ করা হয়েছে।
ইসি উপসচিব দেওয়ান মো. সারওয়ার জাহান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশোধনের জন্য প্রস্তাবিত আচরণবিধি ২০২৫ খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। চূড়ান্ত করার পূর্বে নাগরিকদের সুচিন্তিত মতামত আহ্বান করা হচ্ছে।”
কমিশনের পক্ষ থেকে ১৯ জুন নীতিগতভাবে অনুমোদিত খসড়া আচরণবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী পোস্টার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রচারণার অনুমোদন এবং প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য একক মঞ্চ থেকে প্রচারণার সুযোগ।
আচরণবিধির সংশোধিত সংস্করণে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নতুন প্রস্তাবে আচরণবিধি ভঙ্গের শাস্তি আরও কঠোর করা হয়েছে। সর্বোচ্চ অর্থদণ্ড ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে, তবে কারাদণ্ডের মেয়াদ আগের মতোই সর্বোচ্চ ছয় মাস রাখা হয়েছে।
যদিও পোস্টার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় বিলবোর্ড ব্যবহারের বিধান প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে।
নতুন বিধিতে নির্বাচনকালীন সরকার উপদেষ্টাদের প্রচারে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যাদের এখন ‘ভিভিআইপি’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার ক্ষেত্রে কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না, তা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রচারণার সময় শব্দের মাত্রা আন্তর্জাতিক মান অনুসারে সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবেল নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রত্যেক আসনে রিটার্নিং কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একটি অভিন্ন মঞ্চে সব প্রার্থীকে তাদের ইশতেহার পাঠের সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
নতুন আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে থাকা প্রার্থীদের প্রার্থীতা চূড়ান্ত হওয়ার পর সেই পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
এছাড়া প্রস্তাবিত আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার গ্রহণ করবে কমিশন, যাতে দল ও প্রার্থীরা এই বিধি কঠোরভাবে অনুসরণে বাধ্য থাকে।
নির্বাচন কমিশন বলেছে, জনমতের ভিত্তিতে প্রাপ্ত সুপারিশ খতিয়ে দেখে বিধিমালার চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।