যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন। এবার নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদানসহ ১২টি দেশ।
হোয়াইট হাউস জানায়, নতুন এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে সোমবার থেকে। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি সন্ত্রাসী ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
ট্রাম্প বলেন, “কোলোরাডোতে সম্প্রতি হওয়া আগুন নিক্ষেপের ঘটনায় আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে, বিদেশি নাগরিকদের যথাযথ যাচাই ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।”
সেই ঘটনায় অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাবরি সোলাইমান যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটক ভিসায় প্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। তিনি ২০২২ সালে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেন বলে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।
নতুন নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া এবং সুদানে কার্যকর কোনো পাসপোর্ট যাচাই বা সরকারিভাবে ভিসা প্রক্রিয়ার কাঠামো নেই। ফলে এসব দেশ থেকে আসা নাগরিকদের যথাযথভাবে স্ক্রিনিং করা সম্ভব নয়।
ইরানকে সন্ত্রাসবাদের ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে উল্লেখ করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, “আমরা চাই না ইউরোপে যা হয়েছে, তা আমেরিকায় হোক। আমরা এমন কোনো দেশ থেকে খোলা অভিবাসন চাই না, যেখান থেকে মানুষদের সুরক্ষিতভাবে যাচাই করা যায় না।”
এর পাশাপাশি আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। এগুলো হলো: বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলা।
হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেন, “এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য এক যুক্তিসংগত পদক্ষেপ। এগুলো দেশভিত্তিক এবং শুধু সেইসব রাষ্ট্রের ওপর প্রযোজ্য, যারা উচ্চ ভিসা-অবৈধ বসবাসের হার দেখায় বা সঠিক তথ্য ভাগ করে না।”
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেমনটা হয়েছিল ২০১৭ সালের প্রথম মেয়াদে জারি করা মুসলিমপ্রধান দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সময়।
তবে ট্রাম্পের মতে, সেই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপের মতো সন্ত্রাসী হামলা ঘটেনি।
আলোচিত এ আদেশের মধ্যে রয়েছে এমনকি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞাও। ট্রাম্প এটিকে “লিবারেলিজমের দুর্গ” হিসেবে উল্লেখ করেন।