ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেছেন, মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যুর সাম্প্রতিক ঘটনাটি নকশাগত ত্রুটি এবং ঠিকাদার ও কনসালটিং ফার্মের অবহেলা থেকে ঘটতে পারে। সোমবার উত্তরায় ডিএমটিসিএল কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, গত বছরের ঘটনার পর আমরা শারীরিকভাবে এবং ড্রোনের মাধ্যমে পরিদর্শন করেছি। দুই মাস আগে আরেক দফা পরিদর্শন হয়েছে। নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। নকশায় ত্রুটি থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার বা কাজের বিষয়ে সঠিক বোঝাপড়ার অভাবসহ কয়েকটি কারণেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, যা তদন্তে নিশ্চিত হবে।
ডিএমটিসিএল এমডির ভাষ্য, কাজের সঠিকতা যাচাই করা ছিল কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। তাদের দক্ষতার ঘাটতির কারণে ঘাটতি রয়ে গেছে। তিনি জানান, মেট্রোরেল লাইন ১ প্রকল্পে বর্তমানে কোনো প্রকল্প পরিচালক নেই, তবে চার থেকে পাঁচজন নতুন পরিচালক শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া হবে।
নিজস্ব সক্ষমতায় মেট্রো নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, স্মার্ট ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় দক্ষতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগোতে চাই। বিনিয়োগকারীর সঙ্গে স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে। আমাকে ৫০ বছরের ওয়ারেন্টি দেওয়া হয়েছে, তবে সেই কাঠামোর মধ্যে আমার কর্তৃত্ব সীমিত। প্রয়োজন হলে নকশা পরিবর্তন করা হতে পারে।
রাজনৈতিক দলসহ সবার উদ্দেশে তিনি মেট্রোরেল পিলারে পোস্টার না লাগানোর অনুরোধ জানান। তার বক্তব্য, যদি কোনো শারীরিক ফাটল পোস্টারের নিচে থাকে তবে তা ধরা পড়ে না। আমাদের ব্যয়ের ভিত্তিতে এই মেট্রো বিশ্বের সেরাদের একটি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কাজ অনুমোদন বা সার্টিফাইয়ের সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের অনিয়ম প্রমাণিত হলে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি জানান, নিহত আবুল কালাম আজাদের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এটি জীবনহানির ক্ষতিপূরণ নয়, তাৎক্ষণিক সহায়তা। ঘটনার পরপরই আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসপাতাল থেকে দাফন সব ব্যবস্থা করেছি। পরে মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টাও জরুরি সহায়তা দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিহতের পরিবারের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার অংশ হিসেবে তার স্ত্রীর জন্য যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি প্রায় ছয় মাসের মধ্যে অনার্স ডিগ্রি শেষ করবেন, পরে যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ থাকবে।
