রাজধানী ঢাকার প্রধান সড়কগুলো যেন প্রতিদিনই নতুন সংকটে পড়ে। কোথাও রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের আন্দোলন, কোথাও খোঁড়াখুঁড়ি, আবার কোথাও হঠাৎ বর্ষণের পর জলজট। সব মিলিয়ে ঢাকাবাসীর নিত্যদিনের যাতায়াত হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
বুধবারও রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় একই চিত্র দেখা গেছে। বিশেষ করে রমনা, শাহবাগ, কাকরাইল, মতিঝিল, আগারগাঁও, প্রেসক্লাব, হাতিরঝিল, মগবাজার, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ীতে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। স্বল্প দূরত্বের পথ পাড়ি দিতে কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে গেছে।
সকালে মৎস্য ভবন এলাকায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে শপথের দাবিতে তার সমর্থকেরা অবস্থান নেন। তাদের বিক্ষোভ প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট ও শিক্ষা ভবন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
একই সময়ে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা-কর্মীদের অবস্থান এবং যাত্রাবাড়ীর কাজলায় গ্যাস সংকট নিয়ে মহাসড়ক অবরোধও যানজট সৃষ্টি করে।
এদিকে ঢাকা ওয়াসার অধীনে পানির পাইপ স্থাপনের জন্য বিভিন্ন এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। মগবাজার, বাসাবো, মেরুল বাড্ডা, নীলক্ষেতসহ একাধিক এলাকায় সড়কের অর্ধেক বন্ধ করে কাজ চলায় ট্রাফিক স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। এরমধ্যে দুপুরের পর বৃষ্টিপাত শুরু হলে জমে থাকা পানি যানচলাচল আরও বাধাগ্রস্ত করে।
হাতিরঝিলে আটকে থাকা যাত্রী জাহিদ হাসান বলেন, “রাস্তায় পানি জমেছে, রিকশা মিলছে না, সিএনজি চড়াও অসম্ভব। অফিস ছুটি করে বেরিয়ে আবার সড়কে আটকে থাকতে হচ্ছে।”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, “সাধারণত আন্দোলনের সময় বিকল্প রুট ব্যবহার করতে বলা হয়, কিন্তু একসঙ্গে একাধিক এলাকায় কর্মসূচি থাকায় ডাইভারশন দিয়েও চাপ সামলানো যাচ্ছে না।”
নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া খোঁড়াখুঁড়ি ও অনুমতি ছাড়া আন্দোলন জনদুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবে সমন্বিত পরিকল্পনা ও নিয়মিত নজরদারি জরুরি।
