চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সহকারী অধ্যাপক কুশল বরন চক্রবর্তীর পদোন্নতি স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ছাত্রদের বিক্ষোভ এবং উপাচার্যসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে।
ছাত্ররা কুশলের পদোন্নতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং একটি হত্যা চেষ্টার মামলার অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, কুশল ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম কোর্ট এলাকায় হেফাজতে ইসলামের এক সমর্থকের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৬৪ জন আসামির মধ্যে ২০তম হিসেবে অভিযুক্ত।
এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মুখে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, “উনার (কুশল) নিয়ে বিভিন্ন স্পর্শকাতর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই অবস্থায় বোর্ড বাতিল করা হয়েছে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইয়াহিয়া আকতার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের কাজ করতে পারে না। আমরা কাউকে দোষী সাব্যস্ত বা শাস্তি দিতে পারি না। তবে আমাদের তদন্ত কমিটিগুলো কাজ করছে।”
দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের দপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ করে উপাচার্য, দুই প্রো-ভিসি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে পদোন্নতি বোর্ড বাতিল হওয়ার পর ভবনের তালা খোলা হয়।
মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক ও ছাত্রশিবির নেতা হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, “আমরা চাই না যে, কুশল চক্রবর্তীর মতো ফ্যাসিস্ট সহযোগীরা ক্যাম্পাসে থাকুক। প্রশাসন আমাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে।”
পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের শিক্ষার্থী মনায়েম শরীফ বলেন, “যিনি আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান, তাকে পদোন্নতি দেওয়া মানে দেশের শত্রুদের উৎসাহ দেওয়া।”
অন্যদিকে, সহকারী অধ্যাপক কুশল বরন চক্রবর্তী সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার পদোন্নতি প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই দেড় বছর থেমে ছিল। অবশেষে যখন তারিখ এলো, তখন মিথ্যা প্রচার চালানো হলো। আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে কি না তা কেউ দেখাতে পারবে না। আমি ঘটনার দিন চট্টগ্রামে ছিলাম না। পুলিশও তা বুঝেছে, তাই মামলা গ্রহণ করেনি। আজ যা হয়েছে তা খুবই অন্যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অপমানজনক।”
এই ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়ে চলমান আলোচনা এখনো তুঙ্গে।