টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পাহাড়ধস ও জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার পুরান পল্লান পাড়া, সাবরাং, হ্নীলা ও শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছেন পাহাড়ের ঢালে বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বর্তমানে পাহাড়ধস ও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বেশ কিছু পরিবার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার সন্ধ্যায় টেকনাফের বিভিন্ন দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। পরিদর্শন শেষে তিনি পৌরসভার পুরান পল্লান পাড়ায় অবস্থিত মায়মুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আহসান উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল হাসান চৌধুরীসহ স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা খতিজা খাতুন নামের এক নারী জানান, “পাহাড়ধসের আশঙ্কায় আমরা চার সন্তানসহ এখানে আশ্রয় নিয়েছি। থাকার জায়গা এবং খাবার নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। খাবারের মানও ভালো।”
ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনতে কাজ করছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)। সিপিপির ইউনিট ১৩ এর ডেপুটি টিম লিডার কুলসুম বেগম জানান, “প্রশাসনের নির্দেশে মাইকিং করে আমরা পাহাড়ি এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনছি। দিনরাত সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।”
জেলা প্রশাসক সালাহউদ্দিন বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপদাপন্নদের জন্য মানসম্মত খাবার ও চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যারা পাহাড়ের ঢালে কিংবা বনবিভাগের জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন, তারা চাইলে নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পুনর্বিবেচনা করা হবে।”
প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়কেন্দ্রে সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ চলছে এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।