চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক (অপারেশন) এনামুল করিম সুমনের বিরুদ্ধে বিস্তৃত দুর্নীতি চালানোর গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর।
শনিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিস্তৃত পোস্টে নির্ঝর দাবি করেছেন, ১৯৯৬ সালে तत्कालের নৌপরিবহন মন্ত্রী এসএম আবদুর রবের সরকারের সময় বন্দরে নিয়োগ পাওয়া এনামুল দুই দশকের বেশি সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদটি দখল করে রেখেছেন। তিনি তার ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারের আমলেই এই ক্ষমতা ধরে রেখেছেন।
অভিযোগ অনুসারে, এনামুল রাজনৈতিক পরিচয় সুবিধামতো বদলায়। আওয়ামী লীগের শাসনের সময় তার সঙ্গে তাদের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠতা দাবি করেন, আবার বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামির সাথে সখ্যতার রং দেখান।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট চালানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন নির্ঝর। ভর্তিচ্ছুদের Tk ৫০ হাজার থেকে Tk ১ লাখ পর্যন্ত মুক্তিপণ দিতে বাধ্য করা হয়। এই নিয়োগ ব্যবস্থা পরিচালনা করেন পোর্ট ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ লীগের নেতারা—মীর নঊশাদ (সভাপতি), মো. আলমগীর (সাধারণ সম্পাদক) ও সোহেল চৌধুরী (সংগঠক সচিব)।
এনামুলের নেতৃত্বে বন্দরের জেটিতে প্রতিটি কনটেইনার থেকে নির্দিষ্ট অর্থ আদায় হয়। অনিচ্ছুক শিপারদের কার্যক্রমে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করা হয়। প্রতিটি অফিসিয়াল ফাইল তার মাধ্যমে যাওয়ার ফলে অনুমোদনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা থেকে কোটি টাকার ঘুষ দেওয়া হয়। তার সহযোগী সুজনের মাধ্যমে এসব লেনদেন সংগঠিত হয়, যিনি গোপালগঞ্জের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সাথে সংযোগের দাবি করেন।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, এনামুলের অবৈধ সম্পদের পরিমাণ Tk ৮০০ থেকে ১০০০ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হয়। তার মালিকানাধীন সম্পদ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে এবং স্থানীয় বড় কোম্পানি আবুল খায়ার গ্রুপে গোপন বিনিয়োগ রয়েছে। ২০২৬ সালে অবসর নেয়ার পর তিনি ওই কোম্পানির পরিচালক হিসেবে যোগদানের পরিকল্পনাও করছেন।
আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেওয়া ২৩টি শিপ হ্যান্ডলিং লাইসেন্সের একটি অংশীদার। পোর্ট দিয়ে সোনা চোরাচালানসহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনায় আরশাদুল আলম বাচ্চুর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।
সাংবাদিক নির্ঝর অভিযোগের ব্যাপকতা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বন্দরের আর্থিক ক্ষতি অব্যাহত রয়েছে এবং দুর্নীতির সংস্কৃতি মসৃণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দৈনিক সান independently কোনো তথ্য যাচাই করেনি এবং এনামুল করিম সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।