সিলেটে ডাচ জাতীয় দলের মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে কোরি রুটগার্স প্রথমবার হাজির হলেও তিনি কোনো সাধারণ মিডিয়া কর্মকর্তা ছিলেন না। তিনি ট্রেনিং সেশনে অংশ নেন, নেটে বল ছুঁড়ে দেন এবং কৌশলগত পরামর্শ দেন।
রুটগার্স বলেন, ‘‘ডাচ ক্রিকেট বোর্ড ও রায়ান কুক আমাকে মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে ডাকেন, বিশেষ করে বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যমের জন্য। আমি ইউরোপে কমেন্টেটর হিসেবে কাজ করেছি, তাই মিডিয়ার দিকগুলো জানি। এছাড়া কোচ হিসেবেও সহায়তা করতে পারি।’’
প্রেস কনফারেন্সে তিনি নীরব পটভূমিতে থাকেননি। কোচ হিসেবে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি যুব খেলোয়াড়দের কঠিন প্রশ্নের মোকাবিলা শেখান। তিনি আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘‘নোয়াহ ক্রোস ডাচ দলের ভবিষ্যৎ অধিনায়ক।’’
৩৬ বছর বয়সী রুটগার্সকে ইউরোপীয় ক্রিকেটের বহুমুখী যোদ্ধা বলা যায়। অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া রুটগার্স প্রথমে নিজের দেশেই সেরা হওয়ার সুযোগ কম দেখে, পরবর্তীতে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও স্পেনে কোচিং ও খেলোয়াড় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘ইতালির পথ অনুসরণ করছে স্পেন। স্পেন ক্রিকেট দ্রুত বাড়ছে। যুব খেলোয়াড়রা সক্রিয় এবং ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটও গুরুত্ব দিচ্ছে।’’
রুটগার্স পাকিস্তান সুপার লিগের ইসলামাবাদ ইউনাইটেডে কোচিং অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছেন। সেখানে তিনি উচ্চমানের চাপ ও প্রফেশনালিজমের মুখোমুখি হন। এই অভিজ্ঞতা ইউরোপে ফিরে ক্রিকেটকে আরও পেশাদারভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কাজে এসেছে।
তিনি ইউরোপীয় ক্রিকেটের কিছু কাঠামোগত সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। টার্ফ উইকেটের অভাব, বিনিয়োগের ঘাটতি এবং স্বেচ্ছাসেবীদের উপর নির্ভরশীলতা উন্নয়নের প্রধান বাধা। রুটগার্স বলেন, ‘‘মেয়েদের ক্রিকেট এখন শুরু হয়েছে। এই ফাঁক পূর্ণ হতে কয়েক প্রজন্ম লাগবে।’’
আজ ইউরোপে সক্রিয় খেলোয়াড়ের সংখ্যা মাত্র ৫,০০০ থেকে ৬,০০০। রুটগার্স জানান, ‘‘সবচেয়ে সুন্দর ক্রিকেট দেখবেন না। তবে মজা এবং পেশাদারিত্বের মিশ্রণ কাজ করছে।’’
মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে তাকে দেখলে মনে হতে পারে তিনি সাধারণ কর্মকর্তা। কিন্তু গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, ইউরোপীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যতের নকশা তার কাজের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। রুটগার্স নীরব বিপ্লবের চুপচাপ ইঞ্জিন, যে যুব খেলোয়াড়দের গড়ে তুলছেন এবং ইউরোপীয় ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছেন।