Saturday, June 21, 2025
Homeআন্তর্জাতিকজলবায়ু পরিবর্তনে ধ্বংসের মুখে রিফ, আবেগে উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসছেন ডুবুরিরা

জলবায়ু পরিবর্তনে ধ্বংসের মুখে রিফ, আবেগে উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসছেন ডুবুরিরা

অস্ট্রেলিয়ান গবেষণায় উঠে এসেছে দুঃখ, শোক ও আশাবাদের অনুভূতিই মানুষকে প্রাকৃতিক সুরক্ষায় উদ্বুদ্ধ করছে

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ধ্বংসের মুখে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। এই সংকটময় মুহূর্তে আবেগ, শোক এবং আশাবাদ থেকেই অনেক ডুবুরি সক্রিয়ভাবে এগিয়ে এসেছেন রিফ রক্ষায়। এমনটাই উঠে এসেছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডেলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায়।

শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, ডুবুরিদের প্রাকৃতিক পুনরুদ্ধার অভিযানে সক্রিয় অংশগ্রহণ কেবল বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ নয়, বরং এটি মানুষের সঙ্গে সামুদ্রিক প্রতিবেশের গভীর আবেগময় সংযোগ গড়ে তোলে। গবেষণাটি “মানবিক ব্যতিক্রমবাদ” ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে — যা বলে মানুষ প্রকৃতি থেকে আলাদা বা শ্রেষ্ঠ।

২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডে ১৩ মাস ধরে মাঠ পর্যায়ে এথনোগ্রাফিক গবেষণা চালানো হয়। গবেষক ও প্রত্নতাত্ত্বিক এলা ভালেলোঙ্গা জানান, ডুবুরিরা যখন সামুদ্রিক নার্সারিতে প্রবেশ করে নিজ হাতে প্রবাল ছুঁয়ে কাজ করেন, তখন তাদের সংবেদনশীল অভিজ্ঞতা ও দুর্বলতা রিফের সঙ্গে এক ধরনের গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। এতে তাদের মাঝে এক ধরনের সুরক্ষার অনুভূতি গড়ে ওঠে।

গবেষণায় বলা হয়, যখন মানুষ পরিবেশের অবক্ষয় দেখে শোকাবিষ্ট হয়, তখন সেই আবেগই তাদের রক্ষায় তৎপর করে তোলে। শোকের মধ্যেও থাকে এক ধরনের সচেতন আশাবাদ। এই আবেগ থেকেই মানুষ এগিয়ে আসে যা কিছু অবশিষ্ট রয়েছে তা রক্ষায়।

তবে শুধু ডুবুরি বা বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টাতেই এই বিপর্যয় কাটবে না বলে মনে করেন গবেষকরা। রিফের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে তাপপ্রবাহ, প্রবাল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দূষণ এবং সামুদ্রিক শিকারি প্রাণী। রিফের স্থায়িত্ব বজায় রাখতে বৈশ্বিক জলবায়ু পদক্ষেপ জরুরি বলে গবেষণায় জোর দেওয়া হয়েছে।

অ্যাডেলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্রটি জার্নাল অফ অ্যানথ্রোপোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটি দেখিয়েছে, প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক কেবল বিজ্ঞান নয়, আবেগ ও অনুভূতির ওপরও গঠিত — যা মানুষকে দায়িত্ব নিতে শেখায়।

RELATED NEWS

Latest News